মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি
৫ দিন পেরিয়ে গেলো। তবু নিরুদ্দেশ কিশোর জাকারিয়া। এখনও কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি মাদরাসার ছাত্রটির। মা মুমূর্ষ প্রায়। বাবা শোকে পুরো পাথর। ছোট্ট দুটি বোন জানালার পানে তাকিয়ে থাকে কখন ভাইয়া ফিরে আসবে!

মাদরাসা শির্ক্ষার্থী মোঃ জাকারিয়ার নিখোঁজের মোটিভ এখনও অজানা?
কোথায় গেল। কেমন আছে। মানুষের নানান জল্পনা চলছে। অন্যদিকে চলছে পরিবারে ছেলে হারানো শোকের মাতম। কি ঘটতে যাচ্ছে ছেলেটার ভাগ্যে। এমন তরতাজা ছেলেটির হদিস না পাওয়ায় প্রশাসনের ওপর এলাকাবাসীর ক্ষোভ লক্ষ করা যাচ্ছে।
প্রশাসন এখনও নিরব। কেন খুঁজে বের করতে পারছে না কিশোর জাকারিয়াকে? প্রকৃত রহস্য উদঘাটনেও ডিবি, পুলিশ, সেনাবাহিনী, কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ ঘটনা ঘটেছে ৫ দিন আগে ! অনেকেই অভিযোগ দাখিল করছেন, মাদ্রাসাছাত্র বলেই হয়ত কিশোর জাকারিয়ার বিষয়টি সেভাবে ভাইরাল হচ্ছে না। সঠিক তদন্ত নেই। দু’একটি অনলাইন পোর্টালে এই প্রতিবেদন ফলাও হলেও অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে হতভাগা জাকারিয়ার খবরটি প্রচার হয়নি সেভাবে। যা খুব দুঃখজনক। মর্মান্তিক কিছু ঘটার আগে এই দেশের মিডিয়া বেশিরভাগ সময়ই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। বিগত কয়েক মাসের বেশ কিছু আলোড়িত কিছু খবর, সেটাই বলছে!
জানা যায়, ১৪ এপ্রিল (সোমবার) ১ লা বৈশাখের দিন বিকাল ৫:০০ টায় একটি কল আসে জাকারিয়ার বাবা মুয়াজ্জিন আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইলে। আগত কল নাম্বারটি ছিল- ০১৭১৮৪৮৪৯৯৮ । পুরষের কণ্ঠ শোনা যায়। লোকটা জানায়, সে এস.আই মাসুদ। আপনার ছেলের খবর পাওয়া গেছে। ভৈরব থানার কাছে এসে কল করবেন।
ছেলের খবর শুনে আনন্দের সীমা ছিল না একজন পিতার। যত দ্রুত সম্ভব দু’জন পরিচিত লোক নিয়ে ছুটে যান ভৈরব। এস.আই মাসুদ নামধারী কলারকে ভৈরব থানার কাছে গিয়ে কল করা হলে মোবাইলটি তাৎক্ষণিক বন্ধ দেখায়। পরবর্তীতে ভৈরব থানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়-এই নামের কোন এস.আই সেখানে নেই। থানার অফিসারগণ সব শুনে নাম্বারটিতে যোগাযোগ করতে চাইলে ঐ মোবাইল নম্বরটি আর সক্রিয় পাওয়া যায়নি। ঐ থানার পুলিশ সন্দেহ করছে, কিশোর জাকারিয়াকে হয়ত কেউ অপহরণ করে রেখেছে। না হয় কোন দুষ্টচক্রের হাতে জিম্মী আছে মাদরাসা ছাত্র জাকারিয়া। জাকারিয়ার বাবা আরও জানালেন, পুলিশ নাম্বারটি সম্পর্কে খবর নিয়েছে, এই মোবাইলের গ্রাহকের তথ্যে একজন নারীর পরিচয় মিলেছে। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষে হয়ত বেরিয়ে আসতে পারে? কিন্তু কে করবে তদন্ত? এখনও সরকারি নিরাপত্তা রক্ষকেরা এক প্রকার নিরব ভূমিকা পালন করছেন! উড়ো ফোন পেয়ে ছেলের খবর পেয়ে ঢাকা থেকে সুদূর ভৈরব গিয়েও কোন সুরাহা হলো না। বেশ কিছু টাকাও খরচ হলো। অবশেষে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে। প্রশাসনের কাছে একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেতে আকুল আবেদন আর চোখের পানি ছাড়া আর কিছু বাবি থাকল না মুয়াজ্জিন আব্দুর রাজ্জাকের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমকে আরও জোড়ালো ভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। থানা-পুলিশ-প্রশাসন একযোগে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে কিশোর জাকারিয়াকে সুস্থ শরিরে খুঁজে বের করবে, দেশবাসী এই সু সংবাদের অপেক্ষায় ।
উল্লেখ্য যে, অভিযোগ নিউজ বিডি২৪ থেকে ১৪ এপ্রিল (সোমবার) “টিকাটুলি থেকে মাদরাসার ছাত্র জাকারিয়া নিখোঁজ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। ঘটনা ঘটার বেশ সময় অতিবাহিত হলেও ছেলেটির সন্ধান মিলছে না কোথাও?