ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ও আলেশা মার্টসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মোবাইল ফোন বিক্রিতে চলছে নানা অফার। এর প্রভাব পড়েছে রিটেইলারে ফোন বিক্রিতে। ভাটা পড়েছে দেশের বিভিন্ন রিটেইলার সেন্টারে। যদিও অনলাইনে ফোন কিনে নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি পাচ্ছে না গ্রাহক। তবু মূল্যছাড়সহ নানা অফারে অনলাইনে ফোন কেনায় আগ্রহই বাড়ছে।
রাজধানীর বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, মোতালেব প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটে রিটেইলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইভ্যালি, আলিশা মার্টসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নানা রকমারি অফারে ফোন বিক্রির হওয়ায় রিটেইলারে ফোন বিক্রি কিছুটা কমছে।
বসুন্ধরায় স্যামসাংয়ের শোরুমে দুই বছর ধরে কাজ করছেন মেহেদী হাসান। ফোন বিক্রির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে অফারে ফোন বিক্রি হওয়ায় রিটেইলার পয়েন্টে একটি ইফেক্টও পড়ছেই। অনেক গ্রাহক অনলাইনে একসঙ্গে একাধিক ফোন অর্ডার করছে। আবার নিজের ব্যবহারের জন্য একটি ফোন রেখে বাকিগুলোও কিছুটা লাভে অন্য দোকানে বা ফ্রেন্ডের কাছে বিক্রি করছে।’
রিয়েলমিতে চাকরি করছেন তিতুমীর কলেজের সাকিব আলমাস। তিনি বলেন, আগে মার্কেট থেকে গ্রাহকরা কম মূল্য দিয়ে ফোন ক্রয় করত। এখন অনলাইনের মাধ্যমে কম দামে ফোন ক্রয় করছে। তবে শোরুম থেকে গ্রাহকরা যে ফেসিলিটি পাওয়া যায় যেমন ওয়ারেন্টি-গ্যারান্টি। অনলাইনে তা পাওয়া যায় না। আর অনলাইনে আন-অফিশিয়াল ফোনও বিক্রি হচ্ছে। এই ফোনগুলো মানের দিকে থেকেও অনেক তফাৎ রয়েছে। অনেক গ্রাহক অনলাইনে ফোন সংগ্রহ করে প্রতারিতও হচ্ছে।
ইভ্যালি বা আলেশা মার্টসহ অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর রকমারি অফারে অনেক গ্রাহক ব্যবসাও করছে। তারা এক সঙ্গে অনেকগুলো ফোন সংগ্রহ করছে। সেখান থেকে তারা একটা ভালো ব্যবসাও করছে। অনলাইনে শুধু গ্রাহকই না অনেক ব্যবসায়ীও ফোন সংগ্রহ করছে। আসলে রিটেইলারগুলোতে যে পরিমাণ ফোন বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে বিভিন্ন অফারে ফোন বিক্রি না হলে রিটেইলারে ফোন বিক্রি আরও বাড়ত বলেও জানিয়েছেন রিটেইলাররা।
এদিকে অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনে সংগ্রহ করে একশ্রেণি সন্তুষ্ট হলেও আরেক শ্রেণি বিব্রতবোধ করছে। তাদের অভিযোগ নির্দিষ্ট সময়ে ফোন ডেলিভারি না দেয়া, শোরুম থেকে ফোন ক্রয়ে বিভিন্ন গিফট যেমন- গ্লাস প্রোটেক্টর, ব্যাক কভার, টি-শার্ট থাকলেও অনলাইনে তা পাওয়া যায় না। আবার অনেক গ্রাহক দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও ফোন ডেলিভারি পাচ্ছে না।
অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রাহকদের রিভিউ জানতে ফেসবুক পেজে যাওয়া হলে সেখানে গ্রাহকদের নানা ভোগান্তিও চোখে পড়ার মতো। ইভ্যালির ফেসবুক পেজে দেখা যায়, নাঈম হাসান নামে একজন গ্রাহক সেখানে কমেন্টস করেছে অনেক দিন হয়ে গেল রিফান্ডের কোনো আপডেট নেই। আমার রিফান্ডটি খুবই তাড়াতাড়ি দরকার। আর শুধু যে টাকাটা আমি দিয়েছি সেই টাকাটাই দরকার। কোনো এক্সট্রা টাকা আমি নিতে চাচ্ছি না। ইভ্যালির এর পক্ষ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা আশা করছি।’
ইভ্যালির আরেক গ্রাহক রবিউল ইসলাম জনি নামে একজন ইভ্যালির ফেসবুক পেজে লিখেছেন- প্রডাক্ট না দিয়ে ডেলিভারি দেখাচ্ছে, রিফান্ডের খবর নেই, ৪৫ কর্ম দিবসের কথা বলে ছয় মাস, কল সেন্টারে কল রিসিভ করে কথা না বলে কেটে দেয়’ এটা এক ধরনের প্রতারণা।