২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ২:০০
২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ২:০০

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

১২ বলে দরকার ২৩ রান। ১৯তম ওভারেই যেন ম্যাচটা জিতিয়ে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিলেন মাত্র ১ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার ২২ রান। মেহেদী প্রথম বলে ছক্কা হজম করলেও শেষটা ব্যাপক দাপটের। পরের পাঁচ বলে দিলেন মাত্র ৫ রান। ১০ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেল বাংলাদেশ।

আর তাতে রচিত হলো নতুন ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ, দুই ম্যাচ হাতে রেখে। ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এটি প্রথম সিরিজ জয় বাংলাদেশের।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪ উইকেটে ১১৭ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া।

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। একাদশে আসা বেন ম্যাকডারমটের সাথে ইনিংস শুরু করেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। প্রথম ম্যাচে যেভাবে ম্যাথু ওয়েডকে আউট করেছিলেন নাসুম আহমেদ, অনেকটা একইভাবেই এই বাঁহাতি স্পিনার আবার ফেরান ওয়েডকে।

প্রথম ম্যাচে লেগ স্টাম্পের শর্ট বলে বাজে শটে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়েছিলেন ওয়েড। এবারের বলটি ছিল মিডল স্টাম্পে। ওয়েড শরীর ঘুরিয়ে পুল করার চেষ্টা করেন সজোরে। কিন্তু বল বাড়তি লাফিয়ে তার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে সহজ ক্যাচ যায় সেই শর্ট ফাইন লেগেই। ৫ বলে ১ রান করে আউট ওয়েড।

এরপর অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে হাল ধরার চেষ্টা করেন মিচেল মার্শ ও ম্যাকডারমট। সাকিব আল হাসানের বলে মিচেল মার্শকে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা। তবে রিভিউ নিয়ে টিকে থাকেন মার্শ।

মন্থর পাওয়ার প্লেতে অস্ট্রেলিয়া হারায় এক উইকেট। ৬ ওভারে রান আসে মাত্র ২০। সিরিজে দুই দল মিলিয়ে ৬ ইনিংসে পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে কম রান এটিই।

কিন্তু তারপরও মার্শ-ম্যাকডারমট ধীরে ধীরে রানের চাকা সচল রাখেন। একসময় মার্শের দারুণ ব্যাটিংয়ে রানের গতি বাড়তে থাকে। শেষ অবধি এই জুটি ভাঙেন সাকিব।

জীবন পেয়ে সুযোগটা সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি ম্যাকডারমট। সাকিবকে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ৪১ বলে ৩৫ রান করে। দলীয় রান তখন অস্ট্রেলিয়ার ৭১। ওভার চলে ১৩.২। পরের ওভারেই নিজের ক্যাচ মিসের প্রায়শ্চিত্ত করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। আউট করেন নতুন ব্যাটসম্যান মসেস হেনরিকসকে। তার ক্যাচ নেন নবাগত শামীম। ৩ বলে ২ রান করে ফেরেন তিনি।

এরপর অবশ্য ফিফটির দেখা পান মার্শ। আগের দুই ম্যাচে করেছিলেন সমান ৪৫ রান। এবার ফিফটি করে তিনি শরিফুলের বলে। তাকে ফিরিয়ে ম্যাচে বাড়তি রোমাাঞ্চ আনেন শরিফুল। ৪৭ বলে ৫১ রান করে ফেরেন মার্শ।

শেষের রোমাঞ্চ আর উত্তেজনার নায়ক অবশ্য মোস্তাফিজ। দারুণ বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার আশা ভরসা সব ধুলিস্যাত করে দেন ১৯তম ওভারে মাত্র এক রান দিয়ে। শেষে জয়ের তুলির আচরটা দেন বল হাতে মেহেদী। দারুণ সুখকর সিরিজ জয়ের অনুভূতি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

বল হাতে দুর্দান্ত করেছেন বোলাররা। জয়ের নায়ক মোস্তাফিজ কোনো উইকেট পাননি। কিন্তু চার ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র ৯ রান। ২.২৫ ইকোনমি রেট। ৪ ওভারে ২৯ রানে দুটি উইকেট পান আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম।

নাসুম আহমেদও দারুণ করেছেন। ৪ ওভারে এক মেডেনে তিনি দেন ১৯ রান। তুলে নেন এক উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে ২২ রানে নেন এক উইকেট। শেষের ওভার করা মেহেদী ৩ ওভারে ২৯ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য। একটি ওভার করেছেন সৌম্য, রান দিয়েছেন ৯।

Facebook
Twitter
LinkedIn