৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ / ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৫৯
৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ / ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৫৯

আজ আলোচনা পর্বের সভাপতি- “রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ”

বইমেলার দিনলিপি

গতকাল মেলার ১০ তম দিন চলে গেলো। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। নতুন বই প্রকাশ চলছেই। এসেছে ১৫২ টি বই। সকালে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা হয়। অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সকাল ১০ টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ১৭৫জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। বিচারক হিসেবে ছিলেন শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, চন্দনা মজুমদার এবং সুমন মজুমদার। বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি ও সুচিত্রা মিত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইম রানা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আহমেদ শাকিল হাসমী এবং অণিমা রায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মফিদুল হক।
প্রাবন্ধিক বলেন, সুচিত্রা মিত্র মূলত রবীন্দ্র-প্রতিভার আলোয় বিচ্ছুরিত এক উজ্জ্বল বর্ণশোভা। তাঁর গায়নশৈলীর মাধ্যমে রবীন্দ্রসংগীত মনন ও সৃজনের অনুপম সৌকর্যে চিত্রিত ও বিকশিত হয়েছে। সুচিত্রা মিত্রের উচ্চারণ-ভঙ্গি ও গীত-ভঙ্গি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তাঁর সংগীত পরিবেশনার উচ্চারণ এবং বোধের শুদ্ধতা প্রায় প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছিল। লোকজীবনের মাঝেও সদর্পে অভিজাতের শিল্পকে বরণ করে নেবার পক্ষে ছিলেন সুচিত্রা, তবে তা অবশ্যই পরিমিত মাত্রায়। দৃঢ়তাই ছিল তাঁর ব্যক্তি-চরিত্র ও শিল্প-চরিত্রের বড়ো পরিচয়। আলোচকবৃন্দ বলেন, সুচিত্রা মিত্র কেবল রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীই ছিলেন না, গণসংগীত আন্দোলনেরও একজন অগ্রবর্তী যোদ্ধা ছিলেন। তাঁর পারিবারিক নিবিড় আবহে সংগীতচর্চার প্রচলন ছিল। জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতেও তিনি গানের চর্চা, বিকাশ ও পরিবেশনা সমানভাবে চালিয়ে গেছেন। রবীন্দ্রনাথের গান তাকে শক্তি জুগিয়েছিল। সমগ্র জীবনকেই তিনি পরিমিতি-বোধের মধ্যে বেঁধে রেখেছিলেন। তাঁর সৃষ্টিকর্ম ও সংগীত তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে মফিদুল হক বলেন, আমরা যদি বাংলা গানের সঙ্গে বাংলার সমাজ ও মানবমুক্তির আকুতির সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে যাই, তাহলে প্রাসঙ্গিকভাবেই সুচিত্রা মিত্রের কথা উঠে আসে। সংগীত ও সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়েই এই মহিয়সী শিল্পীকে খুঁজে পাওয়া যায়। তাঁর সাংস্কৃতিক-মানস ও অকুতোভয় আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি ও অনুবাদক জিল্লুর রহমান, কথাসাহিত্যিক পলাশ মজুমদার, শিশুসাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ এবং প্রাবন্ধিক মোতাহার হোসেন মাহবুব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি দিলারা হাফিজ, চঞ্চল আশরাফ এবং রনজু রাইম। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী অনিমেষ কর, কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, মিজানুর রহমান সজল এবং মুস্তাক আহমেদ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুথি পাঠ করেন ফকির আবুল হাশেম। এছাড়াও ছিল মিতা মোস্তফার পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্র’ এবং মো. আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, তপন মজুমদার, অনাবিল ইহসান, রুশিয়া খানম, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, জামাল দেওয়ান এবং সাগর দেওয়ান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড), মো. মনিরুজ্জামান (বাঁশি), অনুপম বিশ্বাস (দোতারা) এবং দশরথ দাস (বাংলা ঢোল)। আজ ২৮শে মাঘ ১৪৩০/১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রবিবার। অমর একুশে বইমেলার ১১ তম দিনে মূল মঞ্চের অনুষ্ঠান থাকবে সরব। বিকেল ৪ টায় অনুষ্ঠিত হবে জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : কলিম শরাফী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সরওয়ার মুর্শেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মাহমুদ সেলিম এবং গোলাম কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন- সাম্প্রতিক ‘পদ্মশ্রী’ পদকে সন্মানিত দেশবরেণ্য রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও গবেষক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এই গুণীজন এপার ওপার দুই বাংলার’ প্রিয় মুখ। এবং সমান জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। বইমেলার আজ ১১ তম দিনে, বাংলা একাডেমির মূল মঞ্চের অনুষ্ঠানে সভাপতির মুখ থেকে কিছু কথা শোনার আহবান থাকল –

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি
তথ্যসেবাঃ সমীর কুমার সরকার, পরিচালক
জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ, বাংলা একাডেমি।
ছবিঃ অনলাইন

Facebook
Twitter
LinkedIn