প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের রুদ্র দহন ছিন্ন করে বর্ষার দিন এলো। আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুইয়ে মিলে বর্ষাকাল। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ই জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিন।
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা, বৃষ্টির পানিতে ভরা নদী, চারদিকে নদীর বাঁকাজল, প্রভাতবেলার মেঘে ঢাকা গ্রাম। আর সঙ্গে তো আছেই কদম, কেয়া, গন্ধরাজ, হাসনাহেনার যত হাসি। বর্ষা ঋতু তার এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। এই ঋতুতে নদ-নদীতে যেমন নতুন করে প্রাণ আসে, তেমনি গাছে ফোটে কদম, বকুল নানা রকমের ফুল। তৃষ্ণাকাতর জগৎ-সংসার এ বর্ষায় ফিরে পায় প্রাণের স্পন্দন। পুরো প্রকৃতি তার রূপ ও বর্ণ বদলে ফেলে।
তবে আষাঢ় শুরু হলেও শহরে আগের মতো কদম ফুলের দেখা মেলা ভার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে আষাঢ়ের কদমে। আর কদম ছাড়া বর্ষার কোথায় যেন অপূর্ণতা রয়ে যায়। তারপরও জরাজীর্ণ গ্রীষ্মক্লান্ত প্রকৃতিকে বর্ষার আকাশ-ভাঙা জলে স্নান করিয়ে সিক্ত হয় ধরণীতল।
টানা তাপপ্রবাহের পর এই আষাঢ়ে ‘নবযৌবনা বরষা’রই প্রত্যাশা এখন বাঙালির মনে, বাংলার প্রকৃতিতে। তবে গত বছর যেমন আষাঢ়, শ্রাবণ পেরিয়ে অনেকটা ভাদ্রে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। এবার অবশ্য আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জলীয় বাষ্পবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ সক্রিয় হচ্ছে যথাসময়ে। বর্ষা এবার আষাঢ়ের শুরুতেই ধরা দেবে।
আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে দেশের বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। বুধবার (১৪ই জুন) সন্ধ্যায় দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ হতে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
তবে বর্ষা যেমন আনন্দের, বর্ষার নির্মম নৃত্য তেমনই হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জনপদ। যেমন— হঠাৎ করে আসা বৃষ্টি নগরবাসীকে স্বস্তি এনে দেয়, আবার জলাবদ্ধতার কারণে সেই বৃষ্টিই হয়ে দাঁড়ায় দুর্ভোগের কারণ। তবুও বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুনের আবাহন।