২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:২৮
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:২৮

আপাতত হাসপাতালেই থাকছেন সম্রাট

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট বুধবার (১১ মে) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে হার্টে গুরুতর সমস্যা থাকায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার (১২ মে) হাসপাতালটির চিকিৎসকরা প্রেস ব্রিফিংয়ে তাকে হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিএসএমএমইউ’র পরিচালক (হাসপাতাল) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তাকে এই অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া যাবে কিনা শারীরিক অবস্থা দেখে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। এতদিন সীমাবদ্ধতা ছিল যে, তিনি অন্য কোথাও চিকিৎসা নিতে পারবেন কিনা। এখন পরিবার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, চাইলে অন্য কোথাও নিতে পারে।

বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রায়হান মাসুম মণ্ডল বলেন, ‘তিনি কিছু সময় স্থিতিশীল থাকেন, আবার কিছু সময় অস্থিতিশীল। তার “সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ” সিনড্রোম আছে। এর সঙ্গে ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট আছে। যখন প্রথম এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন, তার হৃদস্পন্দন এলোমেলো ছিল। সর্বপরি অবস্থা এমন যে, দূর থেকে দেখলে মনে হবে একজন সুস্থ মানুষ বসে আছে। কিন্তু একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে যখন দেখবেন, তখন দেখা যাবে যে, তিনি তার হার্টের ভেতরে একটি অ্যাটম বোম নিয়ে বসে আছেন। যেটি স্বাভাবিকই থাকে, কিন্তু একটু এলোমেলো হলে মৃত্যু নিশ্চিত। যতক্ষণ তার জটিলতাগুলো ঠিক না হচ্ছে, তার এমন জায়গায় থাকতে হবে যে, দ্রুত সিসিইউ কিংবা কার্ডিওলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিনি যতদিন জেল কর্তৃপক্ষের অধীনে ছিলেন, আমরা জেল কর্তৃপক্ষকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত করেছি। এখন যেহেতু তিনি জামিনে মুক্ত আছেন আমরা এখন তার পরিবারকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানাবো। সোমবার আমরা একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করবো। তার অভিভাবক সিদ্ধান্ত নেবেন যে তিনি চিকিৎসা কোথায় পাবেন।’

কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক বলেন, ‘দেড় বছর আগে আমরা যখন তার এনজিওগ্রাম করলাম, তারপর বেডে নেওয়ার পর তিনি শকে চলে গেলেন। আমরা ইনজেকশন দিয়ে তার প্রেসার ওঠানোর ব্যবস্থা করলাম। তার হার্টে মেটালিক ভাল্ব আছে। তাকে তিনটি দামি ইনজেকশন দেওয়ার পর, আমাদের মাঝে আবার ফিরে এলেন। এরপর আবার তার অ্যানিমিয়া ফিরে এলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার মেটালিক ভাল্বের পরিস্থিতি কী সেটি জানতে হবে। এর জন্য ইলেকট্রফিজিওলজি স্টাডি দরকার। তার শরীরে একটি ধাতব বস্তু আছে সেখানে কারেন্ট দিয়ে দিয়ে ইলেকট্রফিজিও স্টাডি করবো। এতে আরেকটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য হাইলি ইক্যুপমেন্ট আছে এমন জায়গায় যাওয়া ভালো। ঢাকায় আমরা এমন জায়গা এখনও ডেভেলপড করতে পারিনি। তিনি সিঙ্গাপুরের কথা বলেছেন, সেটা অবশ্যই ভালো জায়গা। তিনি চাইলে তার চেয়েও ভালো জায়গায় যেতে পারেন। আমরা আসলে ইলেকট্রফিজিওলজি স্টাডিতে অতটা সক্ষম না।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল কবির, ডা. এনায়েত তুষার, ডা. মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন প্রমুখ।

এর আগে বুধবার (১১ মে) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন শর্তে জামিন পেয়েছেন সম্রাট।

শর্তসমূহ হলো-আদালতের অনুমতি ব্যতীত দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না সম্রাট, পার্সপোর্ট জমা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে জমা দিতে হবে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn