করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সৌদি আরব সরকার হঠাৎ করে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় মঙ্গলবার আবুধাবি থেকে দেশে ফেরত আসতে হয়েছে সৌদিগামী শতাধিক বাংলাদেশী কর্মীকে।
ফেরত আসা ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির জন্য স্থগিত থাকার পর পুনরায় বিদেশে কর্মী যাওয়া শুরু হলেও, হঠাৎ করে বিমান বন্ধ করায় সেটা আবার বাধাগ্রস্ত হবে।’
ফেরত আসা বাংলাদেশী কর্মীরা জানান, গত ২০ ডিসেম্বর তারা বাংলাদেশ থেকে ইত্তেহাদ বিমানযোগে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। কিন্তু সৌদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় আবুধাবি বিমানবন্দর থেকে একই ফ্লাইটে তাদের দেশে ফেরত পাঠনো হয়।
এদিকে মাত্র একদিনের ব্যবধানে দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হওয়ায় কাজ হারানোর আশংকায় ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছে ভেঙে পড়েন বাংলাদেশী এসব কর্মীরা।
তাদের মধ্যে কুমিল্লার বাসিন্দা সাবিনা আক্তার ও তাসলিমা আক্তার জানান, তারা দুই বোনসহ মানিকগঞ্জের তিনজন নারী সৌদি আরব যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হওয়ায় কী করবেন বুঝতে পারছেন না। পরে তাদের ব্র্যাকে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
আবুধাবি বিমানবন্দর থেকে ফেরত আসাদের বর্তমানে ব্র্যাকের সেইফ হোমে রাখা হয়েছে।
এর আগে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত সোমবার (২১ ডিসেম্বর) থেকে এক সপ্তাহের সৌদি আরবগামী সকল ফ্লাইট স্থগিত করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উপমহাব্যাবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, সৌদি সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করায় ২১ ডিসেম্বর থেকে এক সপ্তাহের জন্য জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামগামী বাংলাদেশ বিমানের সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বাতিলকৃত ফ্লাইটসমূহের যাত্রীদের ফ্লাইট পুনরায় চালুর পর আসন খালি থাকা সাপেক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার থেকেই সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করার ঘোষণা দেয় সৌদি সরকার।
এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনার কথা জানিয়েছে দেশটির জেনারেল অথরিটি ফর সিভিল অ্যাভিয়েশন (জিএসিএ)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী এক সপ্তাহের জন্য সৌদি আরবে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকবে, যার সময়সীমা আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হতে পারে।
তবে, বর্তমানে সৌদিতে অবস্থানরত অন্য দেশের বিমান সংস্থার কোনো ফ্লাইট থাকলে তা সৌদি ত্যাগ করতে পারবে বলে জানিয়েছে জিএসিএ।
এই নির্দেশাবলী কোভিড-১৯ মহামারী সম্পর্কিত পরিস্থিতির আলোকে পর্যালোচনা ও হালনাগাদ করা হবে, বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বিমানের সময়সূচী সম্পর্কে সকল যাত্রীদের পরে অবহিত করা হবে। রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম ও মদীনা থেকে সাপ্তাহে ২১টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে সৌদি সরকার।
এছাড়া, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে নানা উদ্যোগের অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ ছাড়া যাত্রী পরিবহন করা বিমান সংস্থাগুলোর ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় সৌদি আরব।
সূত্র : ইউএনবি