গ্রামে গ্রামে চলছে। পিঠা পার্বন। বাড়িতে বাড়িতে শীতের পিঠা উৎসব। কৃষাণীরা ব্যস্ত ধানের গোলা সামলাতে। অনেক জেলায় ক্ষেতের আমন ধান কাটা শেষ। আরও কোথাও পাকা ধান কাটছেন সন্মানিত কৃষকেরা।
এ বছর দেশে প্রচুর আমন ধান ফলেছে। বাম্পার ফলন বললেও ভুল হবে না। ধানের মাঠে কৃষকের মুখে রোদের আলোর মত যে ঝলক। সেটাই বলে দিচ্ছে কৃষক আমন চাষে কতটা খুশি। মোটামুটি ধরনের চাউলও যদি হয়। তবু এই ধান থেকে চাউল উঠলে ৫০ কেজি চাউলের দাম বিক্রি করবে মহাজন ২৬৫০ টাকা। এটা ঢাকার চাউলের দোকানের হিসাব। আমন ধানের ফসলের পাকা ধানের মাঠ ঘুরে প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে।
সেপ্টেম্বর অক্টোবর, বাংলা আশি^ন মাসে দেশজুড়ে কৃষকরা আমন ধান রোপন করেছে। ধানের বীজ কেনা থেকে শুরু করে জৈব সার, ইউরিয়া, পটাস, টিএসপি সার ছাড়াও ধানের ডগায় পোকার উৎপাত ঠেকাতে স্প্রে করে ব্যবহার করা হয় পোকামাকড় দমনের কিটনাশক। কৃষক রহমান মিয়া জানান, প্রায় ২৮ শতক জমিতে আমন ধান চাষ করতে উনার প্রায় ৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে এ বছর। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানি সেচ নিয়ে কোন বেগ পেতে হয়নি কৃষকদের। প্রচুর আমন হওয়াটা এবার উপযুক্ত পানি সরবরাহের কারণ হিসেবেও দেখছেন কৃষি গবেষকরা। যার নিজের জমিন আছে। তিনি নিজে ও লোক দিয়ে আমন করেছেন। আর গ্রামগুলোতে প্রায় বেশির ভাগ কৃষকই এখন জোত জমিহীন। উনারা যারা নিজেরা জমিতে ক্ষেত করছেন না। উনারদের থেকে টাকা ও ধানের বিনিময়ে জমি নিয়েও আমন ধানের চাষ করেছেন। তবে এবার প্রত্যেক কৃষকই সারের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কষ্ট করে অন্যের জমি চাষ করে অতিরিক্ত দামে সার কিনতে না পারায় এবার অনেক কৃষক আছেন আমনের ইচ্ছেটাকে কবর চাপা দিয়েছেন। ধান চাষ থেকে থেকেছেন বিরত। নতুন সংসদ প্রতিনিধি যারা নির্বাচিত হয়েছেন। প্রত্যেক প্রতিনিধিকেই নিজ নিজ এলাকার চাষী ভাইদের কষ্টটাকে উপলব্ধি করার আহবান জানিয়েছেন কৃষক সমাজ । সবার একটাই চাওয়া। রক্ত পানি করা শ্রমে সোনার ফসলের ন্যয্য দাম। এবার-কাঁচা ধান মন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। আর শুকনো ধান ১৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকাও পাওয়ার আশা দেখছেন চাষীরা। তবে বিক্রির আগে নিজের নাতি পুতিদের নিয়ে কষ্টের শ্রমের ক্ষেতের চাউলের পিঠা খেতে ভুল করছেন না আপামর সবুজ মাঠের শ্রমজীবি কৃষক পরিবার।
মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি
ছবিঃ পৃথিমপাশা, কুলাউড়া, মৌলভিবাজার থেকে ছবি তুলে পাঠিয়েছেন- মুহতাসিম সাকিব