ম্যাচ শেষ হয়েছে। রেকর্ড বইয়ে হার-জিতের খাতায় ফলাফল লেখাও হয়েছে। তবে দূর হয়নি বেদনা। সারেনি হারের ক্ষত। বরং ক্রমশই তা দগদগে হচ্ছে। চুলচেরা বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে মাঠে বারবার বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ। ৫ রানে হেরে মাঠ ছাড়া বাংলাদেশের এক বিরাট সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
ফেক বা প্রতারণামূলক ফিল্ডিংয়ের দায়ে ভারতকে ৫ রান পেনাল্টি করার সুযোগ ছিল। আর এটা হলেই তো ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারতো। বুধবার অ্যাডিলেড ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে বাংলাদেশের হারের পর আলোচনায় তাই ফেক ফিল্ডিং।
আলোচনা অবশ্য কেবল বাংলাদেশ দলেই। কারোরই নজরে পড়েনি বিষয়টা। ম্যাচের পর নুরুল হাসান সোহান মিক্সড জোনে এসে জানিয়েছেন বিষয়টি। বৃষ্টির আগে ঘটে এই ঘটনা।
দলীয় ৬.২ ওভারের সময় বোলিংয়ে ছিলেন অক্ষর প্যাটেল। লিটন দাস অফড্রাইভে বল পাঠান। অর্শদীপ ফিল্ডিং করে বল ফেরত দেন উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিককে। কিন্তু বল হাতে না থাকলেও ওই সময় ফিল্ডিংয়ের অভিনয় করে বল ছোড়েন। যা ক্রিকেটীয় আইনের পরিপন্থী।
বাংলাদেশ দলের সূত্র মারফত জানা গেছে, ফেক ফিল্ডিংয়ের বিষয়টি আম্পায়ারদের জানালেও তারা আমলে নেননি। ফেক ফিল্ডিং করেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা বিরাট কোহলি। বিষয়টি মাঠের দায়িত্বরত আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউন ও মারাইস এরাসমাসকে জানান শান্ত। কিন্তু বাংলাদেশের বাঁহাতি এই ওপেনারের অভিযোগের গুরুত্ব দেননি আম্পায়াররা।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার সময় বিষয়টি নিয়ে মাঠের বাইরে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের টিকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরামও। কিন্তু এবারও আম্পায়ারদের কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। আম্পায়ার গুরুত্ব না দেওয়ায় ৫ রানের পেনাল্টি থেকে বেঁচে যায় ভারত।
আর এই ৫ রানেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। হারের কারণ হিসেবে উল্লেখ না করলেও ফেক ফিল্ডিংয়ের ব্যাপারটি নিয়ে আফসোস আছে বাংলাদেশ দলের।
উল্লেখ্য যে, পূর্বে ব্যাটসম্যানরা শট খেলার পর ফিল্ডার ফিল্ডিংয়ে বল না ধরেই থ্রো করার ভান করতেন। তাতে ব্যাটসম্যানরা বিভ্রান্ত হতেন, রান আউটও হয়ে যেতেন। এই প্রতারণা থামাতে পাঁচ বছর আগে ফেক ফিল্ডিংয়ের নিয়ম চালু হয়। ২০১৭ সালে আইসিসি নিয়ম চালু করে পেনাল্টির।
আইসিসির আইন অনুযায়ী, কোনো ফিল্ডার কথা বা কাজ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানের মনোযোগ ভিন্নমুখী বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা কিংবা বাধার সৃষ্টি করলে, তা অন্যায় হবে। শাস্তি হিসেবে ব্যাটিং দলের সঙ্গে ৫ রান যোগ হয় এবং বলটিকে ঘোষণা করা হয় ‘ডেড’। কিন্তু আজ যেন বাংলাদেশের জন্য আইনটি কার্যকর ছিল না!