২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১০:৫২
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১০:৫২

আলো ও আশার বাণী ব্যক্ত করেছেন বৃটেনের রাণী

বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ বড়দিন তথা ক্রিসমাস দিবসে জনগণের কাছে আশাবাদের বার্তা পাঠিয়েছেন। যারা আপনজনকে বড়দিনে আলিঙ্গন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে হয়ে ওঠেনি তাদের শান্তনা দিয়ে বলেছেন ‘আপনি একা নন’, অসংখ্য মানুষ এই অবস্থার শিকার। ‘আলো ও আশা’ সবার জীবনে বয়ে আসবে বলে রাণী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) এই কঠিন সময়ে গুরু দায়িত্ব পালন করায় তিনি এনএইচএস এবং ফ্রন্টলাইন কোভিড কর্মীদের অভিনন্দিত করেন। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। বড়দিনের উৎসব পরিকল্পনা পরিবর্তনে বাধ্য হওয়ার কথা স্বীকার করে রাণী তার বার্তায় জনগণকে আগামী বছরের জন্য আশার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অন্ধকার রাতেও নতুন ভোরের প্রত্যাশা রয়েছে। বার্কশায়ারের উইন্ডসর ক্যাসল থেকে বার্ষিক ভাষণে রাণী কোভিডে যারা পরিবার ও বন্ধু হারিয়েছেন এবং এই মহামারীর ফলে বহু পরিবার যে দুঃখের মুখোমুখি হয়েছেন তা স্বীকার করে গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। তবে রাণী অনুভব করছেন যে, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং সর্বত্রই সাফল্য অর্জন হবে

ড়ে মেতে থাকেন প্রতি বছর। জমজমাট হয়ে ওঠে হোটেল ও ট্যুরিষ্ট স্পটগুলো। রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলোতে লেগে থাকে প্রাণবন্ত লোকজনের ভিড়। পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সবাই খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দের  মধ্য দিয়ে সময় কাটাতেন। কিন্তু এবার একেবারে বিপরীত অবস্থা। মহামারির কারণে অন্যান্য দেশের মত বৃটেনেও ক্রিসমাসের জমায়েতকে খুবই ভীতিকর ভাবছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ফলে আরও একটি ভয়াবহ তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে। ফলে প্রিয়জনদের সঙ্গেও দেখা করার বিষয়ে সাবধানতা পালন করা হচ্ছে। ক্রিসমাস উপলক্ষে সরকার পরিবারের বাইরের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সীমিত করেছে। বাড়ির বাইরে, কোনো হোটেল,  রেস্টুরেন্ট ও থিয়েটারে জমায়েত নিষিদ্ধ।

বড়দিন উপলক্ষে প্রতিবছর রাজপরিবারে থাকে উৎসবের আমেজ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৃটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ একত্র হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করেন। রাণী ও তার স্বামী ডিউক অব এডিনবারাহ, প্রিন্স ও অন্যান্য সদস্য মিলিত হয়ে নানা আয়োজন করে থাকেন। দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সবাই মিলে চার্চে গিয়ে বিশেষ প্রার্থনা করেন। এরপর পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করেন। রাজপরিবারের সকলে মিলে একসাথে আহার করেন। এমনি আয়োজন চলে আসছিল ষাটের দশক থেকে নরফুকের স্যান্ড্রিংহাম প্রাসাদে। কিন্তু এবার ৯৪ বছর বয়সী রাণী এলিজাবেথ ও তার স্বামী ৯৯ বছর বয়স্ক ডিউক অব এডিনবারাহ বড়দিন উদযাপন করছেন ঘরোয়াভাবে। অনেকটা নীরবে, নিভৃতে।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬ সালের ২১শে এপ্রিল লন্ডনের মেফেয়ার এলাকায় জন্ম নেয়া বৃটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সিংহাসনের অধিকারী। দেশের  যেকোনো রাজা বা রানীর চেয়ে  প্রায় এক যুগের অধিক সিংহাসনে আছেন। জরিপ সংস্থা অফিস অব ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের মতে, বৃটেনের ৮০ শতাংশেরও বেশি লোক সিংহাসনে অন্য কাউকে দেখেননি। অধিকাংশেরই জন্ম রাণীর সিংহাসনে আরোহনের পর। বয়সে প্রবীণ হলেও রাণী তারুণ্য ধরে রেখেছেন বেশ সুন্দরভাবেই। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলেন তিনি। ১৯৭৬ সালে রাণী প্রথম ইমেইল বার্তা পাঠান। ২০১৪ সালে প্রথম টুইট এবং এবছর প্রথম ইন্সট্রগ্রামে পোস্ট করেন। রাণীর আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, রাজপরিবারের সদস্যদের কর বা রাজস্ব দেয়ার আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ১৯৯২ সাল থেকেই স্বেচ্ছায় আয়কর দিচ্ছেন তিনি।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপ গত ২০শে নভেম্বর তাদের ৭৩তম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করেছেন। দ্বিতীয় লকডাউনে উইন্ডসর ক্যাসলের ওক রুমে শুভাকাক্ষীদের কার্ড ও চিঠি খুলেছেন রানি এলিজাবেথ ও ডিউক অব এডিনবারাহ প্রিন্স ফিলিপ। রাজপরিবারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, বার্কশায়ারে নিজেদের বাসস্থানে ‘একসঙ্গে সময় কাটাতে পারায় আনন্দিত’ এই দম্পতি। লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে’তে ১৯৪৭ সালের ২০শে নভেম্বরে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। 

Facebook
Twitter
LinkedIn