শিবচরে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় ১৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় ইমাদ পরিবহন কোম্পানির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ মার্চ) রাতে থানায় শিবচর হাইওয়ে পুলিশের সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
সোমবার (২০ মার্চ) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন।
ওসি জানান, রোববার ভোরে খুলনা থেকে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। যাত্রাবাড়ি-ভাঙ্গা এক্সপ্রেস ওয়ের কুতুবপুরে আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের নিচের আন্ডারপাস সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে দুমড়েমুচড়ে যায় বাসের সামনের অংশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে মারা যায় আরও ৫ জন। এছাড়া বেশ কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেলে। বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি আর বেপরোয়া গতির কারণেই এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হয়েছে উল্লেখ করে থানায় ইমাদ পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করে হাইওয়ে পুলিশ।
এদিকে নিহতের মরদেহ প্রথমে রাখা হয় শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরিচয় শনাক্তের পর বুঝিয়ে দেয়া হয় পরিবারের কাছে। আর নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার ও আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেয় জেলা প্রশাসন। এই দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনের নাম পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৭ জনই গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার, খুলনার ৪ জন, এছাড়া ফরিদপুর, খুলনা, নড়াইল, সাতক্ষিরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পাবনা জেলার একজন করে।
তারা হলেন— গোপালগঞ্জের গোপিনাথপুর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া, বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোসতাক আহম্মেদ, সদর উপজেলার নশর আলী শেখের ছেলে সজীব শেখ, পাচুরিয়া এলাকার মাসুদ হোসেনের মেয়ে সুইটি আক্তার, টুঙ্গিপাড়ার কাঞ্চন শেখের ছেলে করিম শেখ, সদর উপজেলার আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি, মুকসেদপুর এলাকার আমজেদ আলীর ছেলে মাসুদ আলী, খুলনার সোনাডাঙা এলাকার শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন, খুলনা সাউথ মেন্টাল রোড এলাকার চিত্ত রঞ্জন ঘোষের ছেলে চিন্ময় প্রসুন ঘোষ, ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদু খায়ের ছেলে মহাদেব কুমার সাদু খা, আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লা ছেলে আশফাকুর জাহান লিংকন, বাগেরহাট জেলার শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার, ফরিদপুর হিদাডাঙ্গা এলাকার সৈয়দ মুরাদ আলীর ছেলে মো. ইসমাইল, নড়াইল লোহাগড়া এলাকার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ শিকদার, বাসের চালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে জাহিদ হাসান ও বাস সুপারভাইজার মো. মিরাজ এবং বাসের হেলফার পাবনা সুজানগর এলাকার গহর আলীর ছেলে ইউসুপ আলী।