দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ উপকূলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝড় ও বৃষ্টি চলছে। জলোচ্ছাস ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে উপকূলের অনেক নিুাঞ্চল। পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরা উপকুলে পানিতে ডুবে দু’জন মারা গেছে। দেশের ভেতর সব জায়গায় নৌপথে চলাচল বন্ধ। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দরও বন্ধ।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকুলীয় জেলাগুলোতে রোববার বিকেল-সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে প্রচন্ড বাতাসের সাথে বৃষ্টি হয়। জোয়ার ও জলোচ্ছাসে তলিয়ে যায় বহু নিচু এলাকা। প্রায় ৮ লাখ মানুষ গেছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রাঙ্গাবালীতে জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কলাপাড়ায় পানিতে ডুবে একজন মারা গেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর ভোলায় তীব্র বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়, উত্তাল হয়ে উঠে সাগর। বরগুনায় রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি থাকলেও সন্ধ্যার পর ঝড়ো বাতাস শুরু হয়। সদর উপজেলার দুটি বাধ ও একটি এলাকার স্লুইজ গেট ভেঙ্গে ১২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সদরের দুটি গ্রামের বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় তলিয়ে গেছে।
নোয়াখালীর হাতিয়া নদীর পানি ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়েছে, তলিয়েছে ১৪টি গ্রাম। পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ।চট্টগ্রামে রোববার রাতের জন্য সন্ধ্যা থেকে বঙ্গবন্ধু টানেলে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ ছিল শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সমুদ্র বন্দরে জাহাজের পণ্য উঠানামা এখনও বন্ধ আছে।
কক্সবাজারে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়েছে। শহরের অনেক লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেয়া হয় হোটেল ও রিসোর্টগুলো। কক্সবাজারেও বিমানবন্দর বন্ধ।
বাগেরহাটে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বেড়েছে। ডুবেছে বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজল। মোংলা নদীতে একটি যাত্রী ট্রলার ডুবলেও সবাই সাঁতরে বেঁচেছে। বরিশালে ঝড়ের প্রভাবে সকল নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বেড়েছে বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি। বিমানবন্দর বন্ধ।
খুলনায় রোববার দুপুরের পর থেকে দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় নদ-নদীর পানির উচ্চতা ৩ থেকে ৪ফুট বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা পড়েছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ৫১ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
সাতক্ষীরায় ভাঙন দেখা দিয়েছে একটি বাধে। জোয়ার শেষ হলেও নদীর পানি কমেনি। জেলার শ্যামনগরে ঝড়ের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
ঝলাকাঠির সুগন্ধা ও বিশখালী নদীর পানি বিপদ সীমার ৩০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। ফলে নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ছত্রকান্দায় গাছ উপড়ে পড়ায় বরিশাল থেকে খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক খিছু সময় বন্ধ থাকে। পিরোজপুরের নদ-নদীর পানি বেড়েছে।