২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:২১
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:২১

এই শহরের মৃত্যুকূপ! রাস্তা সংস্কার খুব জরুরি

মারুফ আহমেদ: বিশেষ প্রতিনিধি

বিগত সরকারের আমলে বেশকিছু রাস্তা কাটাকুটি শুরু হয়। খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানার এলাকায় ছিল বেশি। তিলপাপাড়া, খিলগাঁও ও বাসাবোর অনেক বাসা বাড়ির পাশে একপাশ, দুইপাশ কেটে ফুটপাথ ও ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ শুরু হয়। ভেতর এরাকা থেকে এই কাজ খিলগাঁও এর মেনরোড পর্যন্ত দেখা যায়। কম হলেও এক বছর প্রায় শেষ হলেও ! তবু কাজ শেষ হয়নি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পুরনো বিল আটকে যাবার ভয়ে এই কাজগুলো এত দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হয়। বিভিন্ন সড়কের কাজ এখনও অসমাপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু কাজ যেখানে প্রয়োজন নেই। রোড প্রশস্ত, সেখানে তো খোঁড়াখুঁড়ির কথাও ছিল না! তবু এই ধরনের অনেক সড়ক আছে সবুজবাগ ও খিলগাঁও থানার অধীনের বেশ কিছু এলাকায়। এমন ভয়ংকর মৃত্যুফাঁদ হয়ে আছে। এমন বড় বড় গর্ত সৃষ্টি করেছে, ব্যস্ত সড়কের খানাখন্দ দেখলে ভয়ে আঁতকে ওঠা লাগে! এসব বিপদসংকুল গর্তের পাশ দিয়ে দিন দুপুরে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটা দুর্ঘটনা ঘটেও গেছে! রাতে বেলা পথচারী পাড়াপাড় যা আরও ভয়াবহ। তিলপাপাড়া থেকে গোড়ান হাড়ভাংগা মোড়। এর আশে পাশের গলিগুলো, উত্তর বাসাবো ঝিলপাড় মসজিদ রোড, নবীনবাগ সায়রুনবাগ সড়কগুলোর চিত্র বেশি নাজুক। তিলপাপাড়া ঈদগাহ মসজিদ রোড ও বাদশা টি স্টলের সামনের ভয়ানক গর্তটা আছে খুব-ই ঝুঁকির ভেতর। এই দোকানে চায়ের নেশায় রোজ রাতে শত শত চাপ্রেমীরা ভীড় করে। যাদের বেশিরভাগই তরুণরাই আসে বাইক নিয়ে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এত বড় ভয়াবহ ভাংগা রাস্তা সবাই দেখছে। কিন্তু একটা মানুষের সু-নজরে পড়ছে না বিষয়টা? আর কে ঠিক করবে, কার কাছে অনুনয় করবে? কেউ কিছু বুঝতে পারছে না। খিলগাঁও থানার পুলিশের কাভার্ড ভ্যান প্রায় ঠিক এই ভাংগা জায়গার ২০ গজ দূরে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু সদ্য আশে পাশে কাজরত কোন কনট্রাক্টরকে একটা মানুষ এই ভাংগা গর্তটা এনে দেখায় না? এই দোকানের ভীড়ে ফুটপাত দিয়ে যে একটা মানুষ নিরাপদে হেঁটে যাবে, জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে এই পথে যানবাহন, মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। চা ব্যবসায়ী বাদশা জানালেন, অনেক দিন ধরে রাস্তার এই জায়গাটা ভাংগা। কিভাবে ভাংলো। কারা ভাংলো। কি উদ্দেশ্যে এই হাল আল্লা ছাড়া কেউ জানে না? আলআমিন নামক জনৈক ছাত্র জানাল-সিটি করপোরেশন হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর মনে হয় না রাস্তা ঝাড়ু ছাড়া শহরের আর কোন খেয়াল রাখছে? তাদের ঝাড়ুদার এখানে ঝাড়ু দিতে পারে, গিয়ে এই ভাংগা সড়কের গল্প অফিসের বাবুদের বলতে পারে না? আরেক যুবক বলল, কেউ মাথা ঘামায় না, সিটি করপোরেশনকে বললে বলে আমরা জানি না, এটা টিএন্ডটি ভাংছে। ওদের লোককে বলছি, তারা বলে এটা ওয়াসার কাজ! এ বলে ওরে ও বলে তারে! এই চলছে রোড টু রোড?

বছরের পর বছর ধরে ঢাকার অলি গলিতে এই ধরণের মৃত্যুকূপ থাকা মানে, আমরা এখনও পিছিয়ে পড়া জাতির তলানিতেই আছি। এক মাসের রেমিট্যান্স আরেক মাসকে টেক্কা দিচ্ছে ঠিক। কিন্তু অবকাঠামোগত সংস্কার খুব বেশি প্রয়োজন। যেই দেশে সিটির সাবেক নগরপিতার ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে দুই এক থানার অধীনে- দু এক এলাকায় মৃত্যুকূপ খুঁজে পাওয়াকে হয়ত অনেকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বলেও চালিয়ে দিতে পারেন!

ছবি: সোহেল রানা (গোড়ান থেকে)

Facebook
Twitter
LinkedIn