এই সরকার আর একবারের জন্যও ক্ষমতায় আসুক বা থাকুক সেটা এদেশের জনগণ চায় না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলটির জন্ম থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সন্ত্রাস ছাড়া কোনো দিন টিকে থাকতে পারেনি।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়ে ১৭৩ দিন হরতাল পালন করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সামনে তারা গান পাউডার দিয়ে বাস পুড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় ১১ জনকে হত্যা করেছিল তারা। এটা নতুন কোনো ব্যাপার না। সেই পাকিস্তান আমলে অ্যাসেম্বলির মধ্যে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলীকে পিটিয়ে হত্যা করার মধ্য দিয়ে শুরু। তারপর সবকিছুর মধ্যে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সব থেকে বড় হাতিয়ার
সিরাজগঞ্জের জেলা সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে বক্তব্যকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সিরাজগঞ্জে বিএনপির জেলা সমাবেশে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের অন্য নেতাকর্মীদের হামলার শিকার বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নামে সরকারবাদী মামলা হয়েছে। বিএনপি’র এসব নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। গতকাল চারজন নেতাকর্মীকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
এসব নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের যে প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি তাতে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার আক্রমণের পরে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দেখে আমার একটি বিশ্বাস জন্মেছে, এই সরকার আর একবারের জন্যও ক্ষমতায় আসুক বা থাকুক সেটা এদেশের জনগণ চায় না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের সমাবেশে হামলার ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে একডালা মাথাপাড়ার বায়েজিদ, দত্তবাড়ির সুজয়, কোল গয়লার সুমন ও কোল গয়লার জনি চারটি পিস্তল সহকারে হামলা চালায়। পিস্তলধারীদের হামলার দৃশ্য প্রায় সব টিভি মিডিয়ায় ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এ সময় প্রথমেই কাজীপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জুয়েল রানা চাপাতির কোপে আহত হন। উপস্থিত সিরাজগঞ্জের নির্যাতিত, নিপীড়িত জনতা ও আমাদের নেতা-কর্মীরা এ সময় আত্মরক্ষার্থে খালি হাতেই প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দফায় হামলা করে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এত হামলার পরেও একদিকে প্রতিরোধ সংগ্রাম চলেছে অন্যদিকে পাশেই লক্ষাধিক জনতার সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জেলায় জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বিএনপি। এসব জেলা সমাবেশে হবিগঞ্জ, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ ও সিরাজগঞ্জে বড় ধরনের হামলা হয়েছে। ফেনী ও যশোরে ১৪৪ ধারা ভেঙে সমাবেশ করে বিএনপি। নওগাঁয় সমাবেশ করতে পারেনি এবং মহাসচিবের নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশি বাধার কারণে সমাবেশ বাধাগ্রস্ত হয় বলে জানানো হয় দলটির পক্ষ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।