বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় এশিয়ায়ও বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। এক সপ্তাহে পৃথিবীর এই বৃহত্তম মহাদেশে আক্রান্ত বেড়েছে ৭৬ শতাংশ, আর ৫ শতাংশ বেড়েছে প্রাণহানি। চীনে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে ওমিক্রন সংক্রমণের তথ্য মিলেছে। নেপালে ডেল্টার মতো ওমিক্রনও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে চীনে আর দুই সপ্তাহ পর শুরু হতে যাচ্ছে উইন্টার অলিম্পিক। বিশাল এই আয়োজন করোনামুক্ত রাখতে চেষ্টার কোন কমতি রাখছে না সরকার। কড়াকড়ি আরোপের পরও মিলছে সংক্রমণের তথ্য। শনাক্ত হয়েছে ওমিক্রনও। এতে নববর্ষের আনন্দ মাটি হতে বসেছে চীনা নাগরিকদের। এরইমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে একাধিক উপাসনালয়।
ভারতের এক বছরের টিকা কার্যক্রমে টিকার দুই ডোজ পেয়েছে ৬৫ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ। টিকাকরণে সাফল্যের দাবি করলেও এশিয়ায় সংক্রমণের শীর্ষে অবস্থান করছে দেশটি। ৫ দিন ধরে ভারতে প্রতিদিন শনাক্ত হচ্ছে আড়াই লাখের বেশি রোগী। সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র।
ডেল্টার মত ওমিক্রণ ভয়াবহ নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এমন বক্তব্য মানতে নারাজ নেপালের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছে, সম্প্রতি হাসপাতালে যে হারে রোগী বাড়ছে তাতে অতিসংক্রামক এই ধরনকে সাধারণ ভেবে ভুল করার সুযোগ নেই। রোববার দেশটিতে সাড়ে ৪ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা সাত মাস পর একদিনে সর্বোচ্চ।
৩ মাস পর পাকিস্তানে আবারো দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়েছে ৪ হাজারের কোঠা। সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করছে সিন্ধু প্রদেশ। এরপরও সিন্ধু প্রদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মার্কেট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
৫ মাস পর তৃতীয় দিনের মত ২০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে জাপানে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার শনাক্ত হয়েছে রাজধানী টোকিওতে। কোন প্রাণহানি না হলেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সংক্রমণ বৃদ্ধির এই উর্ধ্বগতি।
গত বছর জুলাইতে দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমে বিপর্যস্ত হয় ইন্দোনেশিয়া। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে বাড়তে থাকে মৃত্যুর মিছিল। ডিসেম্বরে সেই বিস্তার কিছুটা কমলেও এবছরের শুরুতেই ওমিক্রনের কারণে আবারো বিপাকে পড়েছে দেশটি।
তিন মাস পর শনিবার একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ইন্দেনেশিয়ায়। ক্লাস্টার সংক্রমণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে রাজধানী জাকার্তা।
করোনার নতুন এই ঢেউয়ে সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোয়। গত এক সপ্তাহে এই দুই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে মোট সংক্রমণের ৪৯ শতাংশই ইউরোপে। আর উত্তর আমেরিকায় সংক্রমণ ৩৩ শতাংশ।
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রমণের যেমন রেকর্ড হয়েছে, তেমনি ইউরোপের ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্যেও সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ডকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে এই ঢেউয়ে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন দেশ নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।