এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের বরাদ্দের তুলনায় ১০ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি আবেদন জমা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এনআরবিসি ব্যাংকের আইপিওর আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ১২ কোটি সাধারণ শেয়ার ইস্যু করার জন্য আইপিও আবেদন গ্রহণ করে এনআরবিসি ব্যাংক। সর্বমোট ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে ব্যাংকটি। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। ইলেক্ট্রনিক্স সাবস্ক্রিপশন পদ্ধতিতে ৩ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন সংগ্রহ করা হয়।
সূত্র জানায়, সর্বমোট ১২০ কোটি টাকা শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে ৬০ শতাংশ বা ৭২ কোটি টাকা। বাকী ৪০ শতাংশ শেয়ার পাবেন উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরির মধ্যে বাংলাদেশি সাধারণ জনগণের জন্য বরাদ্দ ৪০ শতাংশ বা ৪৮ কোটি টাকা। এই ৪৮ কোটি টাকার শেয়ার পেতে আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৩০৩ জন। তাদের আবেদনের বিপরীতে জমা হয়েছে ৫২১ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা তাদের জন্য বরাদ্দের ১০ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
বাংলাদেশি সাধারণ জণগণ, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে বরাদ্দকৃত ৭২ কোটি টাকার শেয়ার পেতে ৫৯৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা জমা পড়েছে। অর্র্থাৎ বরাদ্দের তুলনায় আবেদন পড়েছে ৮ দশমিক ৩০ গুণ।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, দীর্ঘ এক যুগ পর কোন ব্যাংক বাজারের নিবন্ধিত হচ্ছে। শেয়ার পাওয়ার জন্য বিপুল পরিমান আবেদন পড়েছে। ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রতিফলন এটি। আমরা তাদের আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অক্ষুণœ রাখবো। নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সার্বিক সহযোগিতার বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসই’র প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের সম্পদের মূল মালিক আমানতকারীরা। তাই ব্যাংকটিকে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হতে যাচ্ছি। ব্যাংকটির মূল লক্ষ্য সাধারণ মানুষদেরকে সার্বিক সেবার আওতায় আনা। এজন্য শাখানির্ভর ব্যাংকিং ব্যবস্থার পাশাপাশি উপশাখা, বুথ এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ব্যাপকহারে প্রসার ঘটাচ্ছি। ইতোমধ্যে সারাদেশের ৫০০টিরও বেশি স্থানে আমরা সেবা দিচ্ছে।
সূত্র জানায়, জমা পড়া আবেদনের মধ্যেশেয়ার বিতরণ করার জন্য আগামী ৩ মার্চ লটারি অনুষ্ঠিত হবে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার তত্ত্বাবধানে অনলাইনে এই লটারির আয়োজন করবে ব্যাংকটি।
উল্লেখ্য, ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনের বিষয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বরে বিএসইসির অনুমোদন পায় এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড। চলতি মাসের শুরুতে ব্যাংকটি আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার ইস্যু ও সংক্ষিপ্ত প্রসপেক্টাস প্রকাশের জন্য কমিশনের কাছ থেকে সম্মতিপত্র পায়। ব্যাংকটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড। ব্যাংকটির নিরীক্ষক হিসেবে রয়েছে কেএম হাসান অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।
ব্যাংকটি ২০১৩ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওই বছরের ২ এপ্রিল কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ব্যাংকটির ৮৩টি শাখা, বিআরটিএ, ভূমিরেজিস্ট্রেশন অফিসের বুথসহ ৪০০টি উপশাখা এবং ৫৮৯টি এজেন্ট রয়েছে।