২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৩:৪৮
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৩:৪৮

কবি আল মাহমুদের জন্মবার্ষিকী আজ

আধুনিক বাংলা ভাষার প্রধানতম কবি আল মাহমুদের আজ ৮৪তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও কবির সহলেখক আবিদ আজম জানান, কিংবদন্তি এ কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আল মাহমুদ ফাউন্ডেশন থেকে দু’টি প্রকাশনা বের হবে। এর একটি হলো আল মাহমুদের অ্যালবাম ‘সোনালী কাবিনের মহাকবি’। অন্যটি ‘আল মাহমুদের আলোচিত আলাপচারিতা’। দু’টিই সম্পাদনা করেছেন আবিদ আজম। এ ছাড়া অনুষ্ঠিত হবে পৃথক তিনটি ভার্চুয়াল আলোচনা।

অন্য দিকে কবির জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইলে স্মরণানুষ্ঠান ছাড়াও কবির কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলী ও ফাতেহা পাঠ করা হবে।
পঞ্চাশের দশকে আবির্ভূত সাহিত্যের সব্যসাচী কবি আল মাহমুদ কবিতা ছাড়াও লিখেছেন উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ, ছড়া, আত্মজীবনী ইত্যাদি। এ যাবৎ তার প্রকাশিত শতাধিক গ্রন্থ নিয়ে প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য মোট ১৩ খণ্ডে প্রকাশ করেছে ‘আল মাহমুদ রচনাবলি’।

১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হয় আল মাহমুদের প্রথম কবিতার বই ‘লোক লোকান্তর। এর তিন বছর পর ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত হয় তার আরো দু’টি কবিতার বই ‘কালের কলস ও ‘সোনালী কাবিন’। এর মধ্যে ‘সোনালী কাবিন’ তাকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। এ ছাড়া তার ‘মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো’, ‘অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না’, ‘একচক্ষু হরিণ’, ‘মিথ্যাবাদী রাখাল’ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ উল্লেখযোগ্য।

‘কাবিলের বোন’, ‘উপমহাদেশ’, ‘ডাহুকি’, ‘আগুনের মেয়ে’, ‘চতুরঙ্গ’ ও ‘পোড়ামাটির জোড়া হাঁস’ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। ‘পানকৌড়ির রক্ত’সহ বেশ কিছু গল্পগ্রন্থও রচনা করেছেন তিনি। এ ছাড়া ‘যেভাবে বেড়ে উঠ’ তার উল্লেখযোগ্য আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের লিফলেটে কবিতা ছাপা হওয়ার কারণে ফেরারী হওয়া আল মাহমুদ একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামে মুজিবনগর সরকারের স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন। নিজের প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে রচনা করে গেছেন কালজয়ী দু’টি উপন্যাস কাবিলের বোন ও উপমহাদেশ।

সৃজনশীল সাহিত্য রচনার জন্য অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আল মাহমুদ। বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮), জয়বাংলা পুরস্কার (১৯৭২), হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৪), ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), একুশে পদক (১৯৮৭), নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৯০), সমান্তরাল (ভারত) কর্তৃক ভানুসিংহ সম্মাননা পদক-২০০৪ সম্মাননা উল্লেখযোগ্য। লেখালেখির কারণে আল মাহমুদ জীবনব্যাপী মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছেন কোনো স্বীকৃতিই তার সাথে তুল্য নয়।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কীর্তিমান এ কবি নিজের অমরতা নিশ্চিত করে লোক থেকে লোকান্তরিত হন ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।

Facebook
Twitter
LinkedIn