চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার তুলনায় যা ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ ‘ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণপূর্বক বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। কোভিড মহামারি এবং সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কৃষির গুরুত্ব অধিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের মাধ্যমে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।
এছাড়া, টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান তিনটি লক্ষ্য তথা দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে পল্লী অঞ্চলে কৃষি ঋণ প্রবাহ বাড়ানো।
এবার কৃষি ও পল্লী ঋণের চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করবে। বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ করেছে, যা অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, গত অর্থবছরে ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২ জন নারী ১০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এছাড়া গত অর্থবছরে ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২০ হাজার ১৮২ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৪ হাজার ৭৩ জন কৃষক প্রায় ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং কৃষকদের কাছে কৃষি ঋণ সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বর্তমান নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু বিষয় সংযোজিত হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে- প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় হাঁস পালনের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, চিয়া বীজ, জ্বীন ফল, সুগারবীট চাষের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, ভিয়েতনামী হাইব্রিড নারিকেল, কফি ও সুইট কর্ণ চাষের ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, সামুদ্রিক শৈবাল চাষের জন্য ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, মৎস্য খাতের আওতায় গলদা চিংড়ি চাষের ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, সহজে অধিক সংখ্যক কৃষককে কৃষি ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ব্যাংকসমূহ কর্তৃক দলবদ্ধভাবে কৃষি ঋণ বিতরণের পদ্ধতি সংযোজন এবং একর প্রতি ফসল উৎপাদনের ঋণ নিয়মাচার বৃদ্ধি করা হয়েছে।