২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:৪৯
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ২:৪৯

কোমরব্যথার চিকিৎসা

অনেকের কোমরব্যথা হয়। কারও স্বল্প সময়ের জন্য, আবার কারও দীর্ঘ সময়ের জন্য এ ব্যথা হতে পারে। কোমরব্যথা অনেক কারণে হতে পারে। এজন্য আমরা নিজেরাই অনেকাংশে দায়ী। কারণ অনেকেই জানেন না দেহের সঠিক অঙ্গভঙ্গি। সঠিক নিয়মে ওঠা, বসা ও কাজ করলে ৭০ শতাংশ কোমরব্যথা ভালো হয়। মেরুদণ্ডের নিচের দিকে অবস্থিত কোমরের অংশকে ‘লাম্বার রিজিওন’ বলে। লাম্বার রিজিওনে পাঁচটি হাড় থাকে। দেহের গঠন অনুযায়ী ৩, ৪ ও ৫ নম্বর লাম্বার কশেরুকার মধ্যে বেশি আঘাত লাগে এবং ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। মেরুদণ্ডের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে একটি নরম অংশ থাকে, যাকে বলে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক। কোনো কারণে একটি কশেরুকা অপরটির ওপর চাপ দিলে স্পাইনাল কর্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে ব্যথা অনুভূত হয়। এ ছাড়া আঘাতের কারণে, অতিরিক্ত ভ্রমণ, অতিরিক্ত ওজন বহন, শুয়ে-বসে কাজ করা প্রভৃতি কারণেও ব্যথা হয়। চল্লিশোর্ধ্বদের মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়ের কারণে ব্যথা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ কোমরব্যথা গুরুতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসা যেমন বিশ্রাম, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ব্যথানাশক ওষুধ সেবন এবং নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো হয়ে যায়। খুবই অল্প কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের দরকার হয়। নানা কারণে কোমরব্যথা হয়। সেগুলো হচ্ছে উপুড় হয়ে ভারী বস্তু ওঠানো, দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে অনেক দিন কাজ করা, কোমরের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া, দুর্ঘটনা বা ওপর থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে আঘাত পাওয়া, কোমরের হাড়ক্ষয়, অতিরিক্ত ওজন, মেরুদণ্ডের হাড়ের গঠনগত সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, মেরুদণ্ডের টিউমার, মেরুদণ্ডের ডিফরমিটি, নরম বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা, দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে বই পড়া অথবা সোফায় শুয়ে টিভি দেখা প্রভৃতি।

প্রতিরোধ: উপুড় হয়ে কোনো ধরনের ভারী বস্তু ওঠানো যাবে না। নরম ফোমের বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা যাবে না। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। সোজা হয়ে বসতে হবে। সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা জরুরি। এক অবস্থায় বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা ঠিক নয়। দীর্ঘদিন কম্পিউটার ও ল্যাপটপ চালাবেন না। দীর্ঘ ভ্রমণের সময় গাড়ির মাঝামাঝি বসতে হবে।

চিকিৎসা: বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা ও ব্যয়াম নিয়মিত করলে উপশম পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। গরম পানির সেঁক দিতে হবে। ভ্রমণের সময় কোমরের সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করুন। ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোমরব্যথার জন্য অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে।

মো. সাইদুর রহমান

ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ

Facebook
Twitter
LinkedIn