ইউক্রেনের সঙ্গে ১০ দিন ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনে বেসামরিক লোকজনকে যুদ্ধস্থল থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে খণ্ডকালীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া।
দেশটির দুটি শহরে মানবিক করিডোর স্থাপনের অংশ হিসেবে পুতিন প্রশাসন এমন ঘোষণা দিল।
দেশটিতে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ১০টা থেকে এ বিরতি কার্যকর হবে বলে ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ খবর নিশ্চিত করেছে। এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক নিউজ।
এর আগে দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় রাশিয়াকে মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠায় রাজি করানো হয়। যেন বেসামরিক মানুষজন গোলযোগপূর্ণ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে পারে এবং তুমুল লড়াইয়ের জায়গাগুলোতে মানুষকে চিকিৎসা ও খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৫ মার্চ (শনিবার) সকাল ১০টায় রাশিয়ান পক্ষ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করে। এ সময়ে মারিওপোল এবং ভলনোভাখা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের প্রস্থানের জন্য মানবিক করিডোর খুলে দেয়।
‘কয়েকটি শহরে মানবিক বিপর্যয়ের খবর আসার পর এমন সিদ্ধান্ত নিলো রাশিয়া। কিয়েভ, খারকিভ, সুমি, চেরনিগভ এবং মারিওপোল শহর হামলায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তৈরি হয়েছে মানবিক সংকট।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির সহযোগী মিখাইল পোডোলিয়াক তার পক্ষ থেকে বলেছেন যে, প্রায় দুই লাখ মানুষ মারিওপোল থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া দোনেস্ক অঞ্চলের ভলনোভাখা শহর ছাড়তে চায় প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শহরটি।
ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা ডিপিআরের আরেক শহর ভলনোভাখাতেও মানবিক করিডোর স্থাপন করা হয়েছে।
মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাগরিকদের নিরাপদ প্রস্থানের পথ তৈরির বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে সম্মত হয়েছে রাশিয়া।
গত বৃহস্পতিবার বেলারুশে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মারিওপোলের মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো জানান, যুদ্ধবিরতির ফলে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ শুরু হবে। একই সঙ্গে মোবাইল ফোন সেবাও চালু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তারা খাবার বিতরণ ও প্রাথমিক চিকিৎসার কিট সরবরাহের চেষ্টাও করবেন।
এর আগে বেলারুশে আলোচনার সময় ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের সদস্য মিখাইল পদোলিয়াক বলেছিলেন, বেসামরিক নাগরিকদের উদ্ধারের অংশ হিসেবে সাময়িক যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে দুই পক্ষই আলোচনা করেছে।
ডিপিআর ও প্রতিবেশী লুগানস্ক পিপলস রিপাবলিককে (এলপিআর) রক্ষার কথা বলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। ২০১৪ সালে কিয়েভে সামরিক অভ্যুত্থানের পর ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় অঞ্চল দুটি।
হামলার যুক্তি হিসেবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, দেশটি চায় ইউক্রেনের ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।