২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / ভোর ৫:৩৯
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / ভোর ৫:৩৯

চার অস্ত্রধারী শনাক্ত, সবাই ছাত্রলীগের

নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দুজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা দুজনই ঢাকা কলেজের ছাত্র। থাকেন কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে। একজনের নাম কাইয়ুম, অন্যজনের নাম বলতে চায়নি পুলিশ। 

তবে পুলিশ জানিয়েছে চিহ্নিত দুজনই ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির একজন নেতার অনুসারী। সংঘর্ষের ঘটনায় সংগ্রহ করা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে।

এ ছাড়া ধারালো অস্ত্র হাতে গত মঙ্গলবার রাস্তায় যাদের দেখা গেছে, তাদের মধ্যে আরও দুজনকে শনাক্ত করা গেছে। তারাও ঢাকা কলেজের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

অস্ত্রধারীদের দুজনের মধ্যে একজন ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহীন সাদেক মীর্জা। তাঁর বাড়ি বরিশালে। তিনি কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসে ২১৮ নম্বর কক্ষে থাকেন। অন্যজন হলেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা কাউসার হামিদ ওরফে সাদা কাউসার।

ডিবি জানিয়েছে, নাহিদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হেলমেটধারী এবং হেলমেট ছাড়া একাধিক ব্যক্তি কুপিয়েছেন। এর মধ্যে একজনের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যার ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, তার পরিচয় সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দুজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে, যাদের একজন সেই অস্ত্রধারী হতে পারেন।

পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র ও হেলমেট পরে ঢাকা কলেজের যেসব শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন, তাদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত আহ্বায়ক কমিটির চার নেতার অনুসারীরা বেশি সক্রিয় ছিলেন। এর মধ্যে নাহিদ হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জসীম উদ্দিন ও নতুন কমিটিতে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ফিরোজ হোসেনের অনুসারী।

নাহিদকে কোপানোর ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের একজন ঢাকা কলেজের উত্তর ছাত্রাবাসের ২০১ নম্বর কক্ষে থাকেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন ডিবি কর্মকর্তারা। সেই কক্ষে জসীম উদ্দিনের অনুসারীরাও থাকেন বলে ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে।

গত সোমবার রাতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। নিউমার্কেটের দুটি খাবারের দোকানের দুই কর্মীর বিতণ্ডা থেকে ওই ঘটনার সূত্রপাত। এর জের ধরে মঙ্গলবার দিনভর রাজধানীর মিরপুর সড়কের নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয় বিভিন্ন বিপণিবিতানের দোকানমালিক-কর্মচারী ও হকারদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুজন। আহত হয়েছেন অর্ধশত।

এদিকে মঙ্গলবারের সংঘর্ষে নিহত দুজনের মধ্যে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেন হত্যা মামলার তদন্ত করছে ডিবি। অন্যদিকে নিহত দোকানকর্মী মোহাম্মদ মুরসালিন হত্যা মামলার ছায়া তদন্ত করছে সংস্থাটি। এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিউমার্কেট থানা-পুলিশের কাছে থাকলেও এটিও ডিবিতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক জানান, নাহিদ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ভিডিও ফুটেজে যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের বিষয়ে একেকজন একেক ধরনের তথ্য দিচ্ছেন। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে জড়িত ব্যক্তিদের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে ডিবি।

Facebook
Twitter
LinkedIn