লকডাউন জারি হওয়ার পর গত ১৬ মে থেকে ঝাঁপ বন্ধ টলিপাড়ায়। বন্ধ হয়ে গিয়েছে সব ধারাবাহিকের শ্যুটিং। কিন্তু জানা যাচ্ছে, ফেডারেশনের তরফে শ্যুটিংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরেও কলাকুশলীরা বাইরে বেরিয়ে শ্যুটিং করছেন। এই বিষয়েই ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসর্স (ডব্লিউএটিপি)-এর তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেটির মাধ্যমে বিধিনিষেধের নিয়মকালে শ্যুটিং করলে ফেডারেশনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তার প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রযোজকরা।
তবে লকডাউন চলাকালীন ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ অর্থাৎ বাড়ি থেকে শিল্পীদের শ্যুট করে পাঠানো অংশ নিয়ে ধারাবাহিক চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর প্রথম লকডাউনের সময় বেশ কিছু ধারাবাহিকের শ্যুট আগাম করে রাখায় কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে বাধ্য হয়ে এই পন্থা অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বিধিনিষেধের নিয়মাবলীতে বাড়িতে শ্যুট না করার কোনও উল্লেখ ছিল না বলেও যুক্তি দিয়েছেন তাঁরা।
তাঁদের দ্বিতীয় যুক্তি, ধারাবাহিকের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রচুর মানুষের রোজগার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই শুধু মাত্র নিজেদের আর্থিক লাভের জন্য নয়, এই কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের জন্য বাড়ি থেকে শ্যুটিং চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, স্টুডিয়োপাড়া বন্ধ থাকায় কলাকুশলীরা এই মুহূর্তে কাজ না করতে পারলেও প্রাপ্য সাম্মানিক থেকে বঞ্চিত করা হবে না তাঁদের। শুধু এই লকডাউনেই নয়, গত বছরেও কাজ বন্ধ থাকাকালীন টানা ৩ মাস আর্থিক সাহায্য করা হয় কলাকুশলীদের। তাঁদের সুরক্ষার জন্য বিমার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানানো হয় এই বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রযোজকদের দৃঢ় বিশ্বাস এই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ পন্থায় কোনও আপত্তি করবেন না মুখ্যমন্ত্রী। গৃহবন্দি অবস্থায় দর্শকদের মন ভাল রাখতে এবং ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত মানুষদের রজি-রুটি জোগাতে তাই কাজ করে যেতে চান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁদের আবেদন, কাজের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টির দিকে যাতে তিনি নজর দেন। পাশাপাশি, সব কলাকুশলীকে এই সময়ে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। বাড়িতে বসেই কাজ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে তাঁদের। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, প্রাপ্য অর্থ তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার।