দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ছাত্রদলের ডাকা সমাবেশে কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি, হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য শুরু করার পর মঞ্চের সামনে ছাত্রদলের কর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বক্তব্য শুরু করলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এককর্মীর সঙ্গে তর্কে জড়ান ঢাকা পশ্চিম ছাত্রদলের এক কর্মী। বাকযুদ্ধ একপর্যায়ে রূপ নেয় মারামারিতে।
এসময় ডায়াস থেকে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনকে ধমকাতে দেখা যায়। রাকিব নামে একজনকে বসতে বলেন। এক পর্যায়ে ছাত্রদল সভাপতি ডায়াস থেকে নেমে আসেন এবং নেতাকর্মীদের শান্ত করেন। বিএনপি মহাসচিব নেতাকর্মীদের এমন অবস্থা দেখে হাসতে থাকেন। এসময় মহাসচিবের হাত থেকে মাইক নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুন খান।
নেতাকর্মীরা জানান, প্রায়ই বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের মধ্যে এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা যায়। প্রধান অতিথি হিসেবে এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। অনেক অনুষ্ঠানে মহাসচিব রেগে বক্তব্যও বন্ধ করে দিয়েছেন।
পরিস্থিতি শান্ত হলে বিএনপি মহাসচিব আবারো বক্তব্য শুরু করেন। বক্তব্যের শুরুতেই নেতাকর্মীদের উচ্চাঙ্গ সংগীত সম্মেলনের একটি গল্প শোনান। এরপরে বলেন, এত সুশৃঙ্খল সমাবেশ। কিন্তু তোমরা তোমাদের নিজেদের ধৈর্য হারিয়ে ফেললে। এটা দলের জন্য ভালো হবে না, বসো। অনেকক্ষণ বক্তৃতা হয়েছে তো, আমরা সবাই বিরক্তি হয়ে পড়েছি- ঠিক কি না? তাই না?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমার অবস্থা হয়েছে সেই রকম। সবাই বড় বড় শিল্পীরা গান করেছেন, বক্তৃতা করেছেন। এত সুন্দর বক্তব্য রেখেছেন যে, মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছেন। আর আমি যখন বক্তব্য রাখতে যাচ্ছি, তখন আমি দেখছি- এখানে সবাই অস্থির হয়ে গেছেন। এখন আর কারও ধৈর্য নেই। এটাও কিন্তু একটা বিজ্ঞান? প্রত্যেকটি মানুষের মনোযোগ একটা বিজ্ঞান। এটা কিছুক্ষণ থাকে, তারপর আর থাকে না।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল ৯টা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুনসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে শুরু করেন। মিছিল থেকে তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এদিকে সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাবসহ এর আশপাশের এলাকার কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।