মাদক মামলায় জামিন পেয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। পুলিশ রিপোর্ট দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ তার জামিন মঞ্জুর করেন।
পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। আজকের মধ্যেই তাকে জেল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করব।
চার্জশিট দেওয়ার আগ পর্যন্ত পরীমনির জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জামিন আদেশ দেওয়ার পর পরীমনির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান বলেন, দেশে আইন আছে, আদালত আছে, আইনের শাসন আছে। আদালতের ওপর আস্থা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, পরীমনির বিরুদ্ধে আজকের যে মামলা সেটা শুধু মাদক নয়, তার বিরুদ্ধে এলএসডি ও আইসের অভিযোগও আনা হয়েছে। এই ধরনের একটি মামলায় আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালতে আইনি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। সেই কারণেই আজকের জামিন লাভ সম্ভব হয়েছে। আপাতত তার মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। আমরা চেষ্টা করব আজকেই যেন জেলহাজত থেকে মুক্ত করা যায়।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অগাস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। পর দিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ, আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা উল্লেখ হয়।
ওই দিনই পরীমনিকে প্রথম দফায় চার দিন ও ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
সবশেষ গত ১৯ আগস্ট পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট আদালতে হাজির করা হলে পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত ২২ আগস্ট পরীমনির জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দিন আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
পর দিন আরেক দফা আবেদনে ‘দ্রুত শুনানির’ আবেদন করেন পরীমনির আইনজীবী। এতে সাড়া না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। সেখানে রুল চাওয়ার পাশাপাশি পরীমনির জামিন আবেদনও করা হয়। হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৬ আগস্ট সরাসরি জামিন আদেশ না দিয়ে রুল জারি করেন।
আদেশের অনুলিপি পাওয়ার দুদিনের মধ্যে পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে ২২ আগস্ট পরীমনি জামিন অবেদন করার পর শুনানির জন্য ২১ দিন পরের তারিখ রেখে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছে, সেটি কেন বাতিল করা হবে না, তাও জানতে চান হাইকোর্ট।
১ সেপ্টেম্বর রুল শুনানির তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালতকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। আর হাইকোর্টের এ আদেশ বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিবাদীর কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের আইন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় সেদিন।