কাতারের মাটিতে চমক জাগানো উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। এবারের আসরে অবিশ্বাস্য সব গল্পের জন্ম দিয়ে উঠে আসা আফ্রিকার দলটির রক্ষণে শুরু থেকে চেপে ধরা ফরাসিরা প্রথমার্ধের শুরুতেই থিও হার্নান্দেজের গোলে এগিয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৭৯তম মিনিটে কোলো মুয়ানির গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দিদিয়ে দেশমের দল। এরপর আর কোনো দল গোল করতে না পারায় ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে এমবাপে-জিরুদরা।
এর আগে কাতারের আল খোরের আল বায়াত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মাঠে নামে এই দুই দল। শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে ছিল উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। দ্রুত আক্রমণে ফ্রান্সের রক্ষণকে ব্যস্ত রাখতে থাকে দলটি। তবে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে মরক্কোর রক্ষণকে ভেঙে থিও হার্নান্দেজের গোলে এগিয়ে যায় ফরাসিরা।
থিও’র এই গোল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। এর আগে ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে দুই মিনিটের মধ্যেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিলের ভাভা।
গোল হজমের পরপরই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মরক্কো। বিরতির বাঁশি বাজার আগের কয়েক মিনিটে দারুণ কিছু আক্রমণ তৈরি করে দলটি। ৪৫তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ আসে মরক্কোর কাছে। তবে দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় গোল করতে ব্যর্থ হয় আশরাফ হাকিমির দল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বক্সেই বল পেয়ে যান জাওয়াদ ইয়ামিক। তার ওভারহেড শট পোস্টে লাগলে এক গোলের লিড নিয়ে স্বস্তিতে বিরতিতে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতি থেকে ফিরে ফ্রান্সের রক্ষণে ভালোভাবেই চাপ বাড়াতে থাকে মরক্কো। তবে তাদের সব প্রচেষ্টা ফরাসিদের রক্ষণে বাধা পায়। এরপর ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে দারুণ এক গোলে মরক্কোকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন ফরাসি স্ট্রাইকার কোলো মুয়ানি। এমবাপের শট রক্ষণে বাধা পেয়ে ফিরে এলে মুয়ানির দারুণ টাচে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
মুয়ানির এই গোল বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। বেঞ্চ থেকে মাঠে নামার ৪৪ সেকেন্ডের মধ্যেই গোল করেন তিনি। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বদলি নামার ২৬ সেকেন্ডের মাথায় গোল করেছিলেন ড্যানিশ ফুটবলার এবে সান্ডে।
দুই গোল হজমের পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি মরক্কো। এতেই প্রথমবারের মতো শেষ চারে উঠার আনন্দ নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে হাকিমি-বুনোদের। ফ্রান্সের এই জয়ে আগামী রোববার কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জমজমাট ফাইনাল দেখার অপেক্ষায় গোটা ফুটবল বিশ্ব।