জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে তার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম আবু সালেহ মো. সলিমউল্লাহ।
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এর আগে সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার মরদেহ এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টে।
ডেপুটি স্পিকারের জানাজার খবর শুনে অনেকে আগে থেকেই জাতীয় ঈদগাহে জড়ো হন। শেষবারের জন্য প্রিয় মানুষকে দেখতে অনেক আগেই আসেন তারা। ফজলে রাব্বীকে নিয়ে অনেকে স্মৃতিচারণ করে কথা বলতে শোনা গেছে আইনজীবী থেকে শুরু করে অনেককে। সাড়ে ১০টার কিছু আগে একাত্তরে রণাঙ্গণের এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায়। বিকেল তিনটায় গাইবান্ধা সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা হবে। গাইবান্ধায় জানাজা শেষে তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
শুক্রবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে (নিউইয়র্ক সময় বিকেল ৪টা) যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফজলে রাব্বী মিয়া। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের এই সংসদ সদস্য ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গড়ে তুলতে তিনি কাজ করেছেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালে ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হন।
২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।