তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামা বাড়ির আবদার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক ভুলে যান। সন্ত্রাস করে, আগুন দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
আজ রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুবাই থেকে আনা টাকার বস্তা নিয়ে আপনি মাঠে নেমেছেন। আকাশে-বাতাসে এখন টাকা ওড়ে। বরিশাল ও ফরিদপুর সমাবেশে টাকা ওড়ে। এখন থেকেই মনোনয়ন বাণিজ্য ও এমপি-মন্ত্রী কেনাবেচা শুরু করেছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসব হতে দেবে না।
তিনি বলেন, অর্থ পাচার মামলায় দণ্ড নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামি তারেক রহমানকে যদি নেতা বানানো হয়, তবে খেলা হবে।
তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়াম লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের কারা কারা দুর্নীতি করে আমরা জানি। সময় আছে সংশোধন হয়ে যান। নইলে খবর আছে।
সম্মেলনে নিজের নামের বানান ভুল দেখে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এত আয়োজন অথচ হেলিকপ্টার থেকে নেমে দেখি আমার নামের বানান ভুল। নেত্রী বলেছেন বিলাসবহুল সম্মেলন করা যাবে না। সাশ্রয়ী হতে হবে। গরিবের পাশে দাঁড়াতে হবে। অপচয় করা যাবে না। অথচ বিলবোর্ড বানিয়ে সবাইকে নায়ক বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানকে অন্যতম কুশীলব বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী। জিয়াউর রহমানকে মীরজাফরের সঙ্গে তুলনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন ইতিহাসের মহানায়ক মহাবীর বঙ্গবন্ধুর নাম ওরা মুছে দিতে চেয়েছিল, শিশু রাসেলকে হত্যা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল ও জামালকে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি।
তিনি বলেন, কে বলেছে বঙ্গবন্ধু নেই? তিনি আছেন কৃষকের লাঙ্গলের ফালে, ভাটিয়ালি গানে, পাখির কলরবে। যতদিন সমুদ্রের গর্জন থাকবে, তোমার স্মৃতি কেউ মুছে দিতে পারবে না। তোমার নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই।
রোববার সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। এদিন সকাল ৭টা থেকে সম্মেলনস্থলে মানুষ আসতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে ঝিনাইদহ শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে লোক সমাগম উপচে পড়ে আশপাশের রাস্তায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শফিকুল আজম খান চঞ্চল, আনোয়ারুল আজিম আনার, তাহজিব আলম সিদ্দিকী সমি, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন এমপি, পারভীন জামান কল্পনা ও গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা এমপিসহ ঝিনাইদহ জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে নতুন কমিটি ঘোষণার প্রস্তাব করলে ওবায়দুল কাদের নেত্রীর নির্দেশে পুরোনো কমিটির সভাপতি আব্দুল হাইকে সভাপতি ও সাইদুল করিম মিন্টুকে বহাল রাখেন।