বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আম্পায়ারিং বিতর্কের সম্পর্ক বেশ পুরোনো। এনসিএল, বিসিএল কিংবা ডিপিএল সব ধরনের পেশাদার লিগেই অহরহ এমন ঘটানা দেখা যায়। এই আম্পায়ারিং বিতর্ক থেকে বাদ পড়েনি চলমান বিসিএলও। বরং সেই বিতর্কের পালে আরও একবার হাওয়া দিয়েছে নর্থ জোন এবং ইস্ট জোনের মধ্যকার ম্যাচ।
ইস্ট জোনের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রিপন মন্ডলের করা ব্যাক অফ লেন্থ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেছিলেন তামিম ইকবাল। বলের বাড়তি বাউন্সে তিনি পরাস্ত হলে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাতে সাড়া দেন আম্পায়ার আলি আরমান রাজন।
আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে তামিমের প্রতিক্রিয়ায় ছিল অসহায়ত্বের ছাপ। যেন হাজারো অভিযোগ তারপরও কিছুই বলার নেই! দুই হাত তোলে আম্পায়ারকে আরও একবার জিজ্ঞেস করছিলেন এটা আউট? এমনকি প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটারদের উদযাপন দেখেও তামিমের যেন বিশ্বাসই হচ্ছিলো না তিনি আউট।
খালি চোখে দেখেও যতটা বুঝা গেছে, ব্যাক অফ লেন্থের বল আচমকা লাফিয়ে উঠে। তামিমও খানিকটা লাফিয়ে উঠে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন। তখনই ব্যাটে পাশে ঘেষে বল চলে যায় উইকেটকিপার আকবর আলির গ্লাভসে। আর এমন সিদ্ধান্তেই দ্বিধায় ছিলেন আম্পায়ার। যেহেতু রিভিও নেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না বা থার্ড আম্পায়ার কল করারও সুযোগ ছিল না তাই শেষ পর্যন্ত আউটেরই সিদ্ধনাত দেন আম্পায়ার।
এ ক্ষেত্রে ভাগ্য সহায় ছিল না তামিমের এটা বলাই যায়। কারণ বেনিফিট অব ডাউটের জায়গা থেকে ফেভার পেতে পারতেন তামিম। তবে সেটা গেছে তার বিপক্ষে। আউট হওয়ার পর তামিমের শারীরিক ভাষা দেখেও মনে হচ্ছিলো তিনি নিশ্চিত যে, বল তার ব্যাটে লাগেনি। তবে যেহেতু রিভিও নেয়ার সুযোগ নেই তাই সিদ্ধান্ত না মেনে কোনো উপায় ছিল না নর্থ জোনের অধিনায়কের।
ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারতো, তবে ড্রেসিংরুমে ফিরেও যেন অস্বস্তিতে ভুগছিলেন তামিম। তাই তখনই ম্যাচ রেফারির দ্বারস্থ হন এই অভিজ্ঞ ওপেনার। ম্যাচ চলাকালীন সময়েই ড্রেসিংরম থেকে বের হয়ে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে দেখা করেন তামিম। অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই এই সময় ম্যাচ রেফারির কক্ষে ছিলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। বিসিবির প্রধান নির্বাচক আর ম্যাচ রেফারি শওকতুর রহমান চিনুর সঙ্গে মিনিট পাঁচেকের আলোচনা শেষে আবারও ড্রেসিংরুমে ফেরেন তামিম।
প্রধান নির্বাচক এবং ম্যাচ রেফারির কথায় তামিম হয়তোবা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন, ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন, ম্যাচের বাকি খেলাটাও হয়েছে ঠিক-ঠাক তবে ঘরোয়া আসরে এমন বাজে আম্পায়ারিং চলতে থাকলে বিসিবির খাতায় এমন অভিযোগের সংখ্যা বেড়েই চলবে।