শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে সিরিয়া ও তুরস্ক সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা। শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে তিন শতাধিক মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগই সিরিয়ার। আহত হয়েছে দুই দেশের কয়েক হাজার মানুষ। মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। বহু মানুষ আটকা পড়েছে ধ্বংসস্তুপে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে তুরস্ক সরকার। উদ্ধার অভিযানে বেসামরকি প্রশাসনের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। ভূমিকম্পটি লেবানন ও সাইপ্রাসেও অনুভূত হয়।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে তুরস্ক ও সিরিয়া। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের গাজিয়ানটেপে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এতে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ আশপাশের অঞ্চল কেঁপে ওঠে। সিরিয়ার যে অংশে ভূমিকম্প আঘাত হানে তা সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত। দুই দেশেরই হাজার হাজার ভবন ধংস হয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ্। কয়েকশ’ মানুষের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে সিরিয়া ও তুরস্কের সরকার। মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত¡ জরিপ কেন্দ্র ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূ-কম্পনটির একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ও শক্তিশালী। এর উৎপত্তি স্থল ছিল সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তবর্তী প্রদেশ গাজিয়ানতেপ এর ২৩ কিলোমিটার পূবে। গভীরতা ছিল ১৮ কিলোমিটার। মূল ভূ-কম্পনটি আঘাত হানার পর পর আরও কয়েকবার কেপে ওঠে ওই এলাকা। সিএনএন জানিয়েছে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় একদিনেই মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫শরও বেশি ।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি সংস্থা এএফএডি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধার কাজের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সিরিয়ার আলেপ্পো, লাতাকিয়া, হামা এবং টারতুসে মৃত্যু হয়েছে বেশি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, শক্তিশালী এই ভূমিকম্পটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুরস্কের অন্তত ১০টি শহর। দেশটিতে তীব্র ঠান্ডা বিরাজ করায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কাজ। দুই দেশের হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। ধসে পড়া ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছে বহু লোক।ফলে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে। ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে সিরিয়া ও তুরস্ক সরকার।
এদিকে, মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। সেইসাথে দ্রুত উদ্ধার কাজের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।