সিলেট-সুনামগঞ্জের বানভাসিদের সহায়তায় নিবেদিতপ্রাণ তাশরীফ খানের কার্যক্রমের সঙ্গে এরইমধ্যে সবাই পরিচিত। শুরু থেকে বন্যার্তদের পাশে রয়েছেন তিনি। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন মানুষের দুয়ারে। এবার ত্রাণ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। খেয়েছেন পুলিশের ধমক। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নিজেই জানান।
তাশরীফ লাইভে এসে বলেন, ‘একটি ইনসিডেন্টের কথা আমি শেয়ার করব। এটা আমার মন থেকে যাচ্ছে না। সারা দিন কাজ করার পর, গতকাল আড়াইটার দিকে ঘটনাটা। আমি জায়গাটার নাম বলব না। সিলেটের মধ্যেই। আমার গলা ব্যথা ছিল। সবাই লাল চা খাচ্ছিলাম।’
এরপর তিনি বলেন, ‘তো সেখানে পুলিশের একটি গাড়ি এলো। আমরা বসে আছি। গাড়ির ড্রাইভারের পেছনের জায়গাটাকে কী বলে জানি না। সেখানে একজন অফিসার বসে ছিলেন। তিনি এসে ধমকের সুরে বললেন, আপনারা এখানে কী করছেন? আমি বললাম, স্যার আমরা ঢাকা থেকে এখানে ত্রাণ দিতে এসেছি। আপনাদের সিলেটের জন্যই কাজ করছি। আমি একটি চা খেতে এসেছি। খেয়েই চলে যাব।’
কিন্তু এর উত্তরে পুলিশের সেই কর্মকর্তা তাশরীফকে ধমক দেন। এমনটা উল্লেখ করে এই গায়ক বলেন, ‘তিনি সরাসরি আমাকে ধমক দিয়েছেন। বললেন, চলে যান এখান থেকে। তখন আমার খুব কষ্ট লেগেছে। আমাদের কেন ধমক দেওয়া হবে? আমি তাশরীফ খান বাদ দিলাম। আমি একজন নাগরিক, আমাকে কেন ধমক দেওয়া হবে? আমি বলেছি, স্যার, একজন নাগরিককে এভাবে ধমক দেবেন না। আমরা সিলেটের জন্য কাজ করছি। আমরা এখানে চুরিচামারি করতে আসি নাই। এটা করবেন না। আমি তাকে অনুরোধ করেছি, স্যার, আমি চায়ের কাপটা শেষ করে চলে যাব, দুইটা মিনিট সময় দেন। তখন আমাকে আঙুল তুলে বলা হয়েছে, এহন ভালো কইরা বলতেছি, এরপরে খারাপ করে বলব। এক্ষুনি চলে যান। এই কথা শোনার পর আমি একটা শব্দও করি নাই।’
তাশরীফের এই লাইভটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যেতে থাকে। ঠিক তখনই প্রশাসন থেকে ফোন দেয়া হয় তাকে। জানানো হয়, ত্রাণ বিতরণে কার্যক্রমে সহায়তা করা হবে তাকে। প্রশাসনের এই আশ্বস্ত করার খবরটিও তাশরীফ ফেসবুকে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল রাতে ফেইসবুক লাইভের পরপরই সিলেটের পুলিশ প্রশাসন আমাদের আস্বস্ত করেছেন, যেকোনো প্রয়োজনে তারা আমাদের পাশে থাকবেন এবং ইতোমধ্যেই ওনারা আমাদের ত্রাণের নিরাপত্তা দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে তাশরীফ প্রথম যেবার লাইভ করেন সেবার তার তহবিলে জমা হয়েছিল ১৬ লাখ টাকা। সেই টাকা নিয়ে তিনি ঝাপিয়ে পড়েছিলেন অসহায়দের সহায়তায়। এরপর ১৬ জুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে আবারও এই গায়ক জানান, তহবিলে টান পড়েছে। মজুদকৃত ত্রাণ যা আছে তা দিয়ে দিন দুয়েক যেতে পারে। এরপরই এক অভূতপূর্ব সাড়া পান তিনি।