দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের সকল টিকেট কালোবাজারিদের দখলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময়ের ৪ দিন আগে ট্রেনের টিকেট বিক্রি করলেও ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যেই ট্রেনের সকল টিকেট কেটে নিয়ে যায় কালোবাজারীরা। কালোবাজারীদের ভাড়াকরা নারী পুরুষ লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ট্রেনের টিকেট কেটে নিয়ে যায়। কোনভাবেই এই ট্রেনের টিকেট কালোবাজারিদের মুক্ত করা যাচ্ছে না দিনাজপুর স্টেশন চত্বর। ট্রেনের টিকেট কালোবাজাদের সাথে ট্রেনের টিকেট কাউন্টার মাষ্টারসহ ট্রেনের কর্মকর্তাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
দিনাজপুর খেকে ঢাকাগামী ট্রেনের সোভন চেয়ার ৪৬৫ টাকা মূল্যের টিকিট কালোবাজারিরা টিকেট বিক্রয় করছে ১০০০ থেকে/১২০০ টাকায়, এসি চেয়ার ৯০০ টাকা মূল্যের টিকিট কালোবাজারিরা বিক্রয় করছে ২০০০ থেকে /২২০০ টাকায়, স্লিপার কেবিন ১৮০০ টাকা মূল্যের টিকিট কালোবাজারিরা বিক্রি করছে ৫০০০/থেকে ৭০০০ হাজার টাকায়।
পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুর হয়ে ঢাকা যাওয়া আসা করে ৩টি আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুতযান আন্তঃনগর এক্সপ্রেস, বিমুসিই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন এবং একতা এক্সপ্রেস ট্রেন এই আন্তঃনগর ট্রেনে ৩টি, একশত পার্সেন্ট টিকিটের মধ্যে অনলাইনে ৫০ শতাংশ এবং কাউন্টারে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রয় করা হয়। এর মধ্যে দিনাজপুরে ৩টি আন্তনগর ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে বরাদ্দ রয়েছে, সকালে আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেসের এসি বাধ ৪টি, এসি চেয়ার ৪টি, সোভন চেয়ার ৯০টি, দুপুরে বিমুসিই আন্তঃনগর ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস এসি বাধ ৮টি, সোভন চেয়ার ৯০টি, রাত্রিতে আন্তঃনগর ট্রেন একতা এক্সপ্রেস এসি বাধ ৬টি, সোভন ৯০টি টিকিটসহ অনলাইনের টিকিটগুলো প্রায় সমুদয় টিকিট চিহ্নিত টিকিট কালোবাজারির ডিলারেরা, বিপদগামী নারী ও পুরুষদের টিকিট কাউন্টারের প্রথমসারিতে দার করিয়ে টিকিটগুলো কেটে নিচ্ছে। সেসঙ্গে অনলাইনের টিকিটগুলোও কেটে নিচ্ছে ফলে আন্তঃনগর ট্রেনের সাধারণ যাত্রীরা টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই টিকিটগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ে দিনাজপুর স্টেশন চত্ত্বর প্লাটফর্মের ভেতর ও বাহিরে গরুর হাটের ন্যায় প্রকাশ্যে ঢাকঢোল পিটিয়ে দুইগুন তিনগুন অধিক দামে বিক্রয় করছে।
সাধারন যাত্রীরা ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে এবং অনলাইনে টিকিট না পেয়ে নাজেহাল হয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়েই দুইগুন তিনগুন দামে টিকিট কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ট্রেনের সাধারণ যাত্রীরা।
প্রকাশ্যে টিকিট বিক্রি করলেও দিনাজপুর রেলওয়ে প্রশাসন (এসএস ডিপার্টমেন্ট) বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) দিনাজপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখছেন, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে উল্টো তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াচ্ছেন, আরসি কোকাকলা, পান, সিগারেট ঘাড়ে হাত দিয়ে বসে বসে খাচ্ছেন। কালোবাজারিদের সার্বিক সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ে স্টেশন দিনাজপুরের এ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপর।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর বিরল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোশারফ হোসেন, দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট (এসএস) জিয়াউল জিয়া ছুটিতে থাকায় (এসএস) এর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি জানান টাকা দিয়ে ট্রেনের টিকিট কাটছে তারা আমি কি করব।
রেলওয়ে সূত্র জানায় বিরল স্টেশন মাস্টার মোশারফ হোসেন পঞ্চগড় স্টেশনে কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনকালে স্টেশন ওয়ার্কিং রুল, স্টেশন ম্যেনুয়েল, জিআর রুল এবং জিএস রুল পরিপন্থী কার্যকলাব করার অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিরল স্টেশনে বদলি করা হয়।
আন্তনগর ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির ব্যাপারে রেলওয়ে থানা দিনাজপুরের অফিসার ইনচার্জ এরশাদুল হক ভূইয়া বলেন, বিগত সময় জুড়ে আমরা অনেক টিকেট কালোবাজারিদের ধরে জেল হাজতে পাঠিয়েছি আমাদের পুলিশ সদস্যরা সর্বক্ষণিক রেলওয়ে স্টেশন মনিটরিং করে থাকে। প্রকাশ্যে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করা হচ্ছে আমরা জানতে পারলাম। তাদের সনাক্ত করে প্রমান সাপেক্ষে টিকিট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব বলে জানান।