ভারতে ফের বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। শনিবার (১ জানুয়ারি) দেশটির দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ২ হাজার ৭১৬ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। একই সময়ে দিল্লিতে মারা গেছেন একজন। খবর এনডিটিভির।
গত কয়েকদিন ধরে দিল্লিতে রেকর্ড সংখ্যক করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন আকান্তের সংখ্যাও বাড়ছে দেশটিতে। মহামারি শুরুর পর থেকে ভারতের দিল্লিতেই করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ১০৮ জনে।
তবে ওমিক্রন ভারতের জন্যও নিয়ে আসতে পারে অশনি সংকেত। এমন আশঙ্কা করছেন দেশটির কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। দেশটিতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪৩১। শনিবার দিল্লিতে ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে ৩১ জনের। এটি নিয়ে সেখানে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে দিল্লির চেয়েও মহারাষ্ট্রে ওমিক্রন শনাক্তের সংখ্যা বেশি। মহারাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৪৫৪ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।
হঠাৎ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দিল্লিতে ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। স্কুল ও জিম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অর্ধেক লোক দিয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস পরিচালনা, অর্ধেক যাত্রী বহনের শর্তে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু রাখা এবং রাতে কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন শনিবার বলেছেন, ‘রাজধানীতে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দরকার কিনা তা পর্যালোচনা করা হবে; যদিও হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি এখনও উদ্বেগজনক নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিশুদের জন্য হাসপাতালে ৩ হাজার বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। সর্বদা নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। যখনই বাড়ির বাইরে যাচ্ছি, তখনই মাস্ক পরতে হবে। এটি আমাদের করোনাভাইরাসের আরও বিস্তার বন্ধ করতে সাহায্য করবে।’
গেলো বছর করোনার ভয়াবহ কবলে পড়ে ভারত। ডেলটা ধরন কাবু করে ফেলে গোটা দেশকে। সংক্রমণের সর্বোচ্চ সময় দেশটিতে দৈনিক প্রায় ৪ লাখ রোগী শনাক্ত হয়। করোনা ঠেকাতে দিশেহারা হয়ে পড়ে দেশটি। পরে জোরদার করা হয় টিকাদান কর্মসূচি। ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমতে শুরু করে।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বপ্রথম করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার খবর বিশ্ববাসীকে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(ডব্লিউএইচও)। এরপর এটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। ওমিক্রন এবার সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে ইউরোপের দেশগুলোকে। দেশে দেশে নতুন করে চালু হয়েছে করোনার বিধিনিষেধ। এরপরও থামছে না সংক্রমণের দাপট।