উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে সমুদ্রসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ দুটি পশ্চিম উপকূলে সতর্কতামূলক গুলি বিনিময় করেছে। তীব্র সামরিক উত্তেজনার মধ্যে গতকাল সোমবার এ গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। খবর: রয়টার্স।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, গতকাল স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রচলিত সমুদ্রসীমা নর্দার্ন লিমিট লাইন (এনএলএল) অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ার একটি বাণিজ্যিক জাহাজ। এটিকে বিদায় করতে সতর্ক করে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এবং সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে।
জেসিএস আরও জানিয়েছে, তারা সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনায় ‘স্বাভাবিক অভিযান’ চালিয়েছে। তারা উত্তর কোরিয়ার পদক্ষেপকে ২০১৮ সালে হওয়া দ্বিপক্ষীয় সামরিক চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে। ওই চুক্তিতে সীমান্ত এলাকায় ‘শত্রুতামূলক আচরণে’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
অপরদিকে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর জাহাজ এনএলএল সীমা লঙ্ঘন করার পর ১০টি রকেট গোলা ছুড়ে সতর্ক করে তারা। দেশটির পিপলস আর্মির জেনারেল স্টাফের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শত্রুর জাহাজকে দৃঢ়ভাবে বিতাড়িত করতে আমরা প্রাথমিকভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি কামান থেকে শত রাউন্ড গোলাবর্ষণ করেছে। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের বার্ষিক হোগুক প্রতিরক্ষা মহড়া শুরু করে, যা ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলার কথা। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকিবিরোধী সক্ষমতা জোরদার করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনী জানিয়েছে, এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা পশ্চিম উপকূলে চার দিন মহড়া চালাবে। মহড়ায় তাদের এইজেস সজ্জিত ডেস্ট্রয়ারসহ ২০টি যুদ্ধজাহাজ ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ও এ-১০ স্ট্রাইক বিমান অংশ নেবে।
পিয়ংইয়ং এ মহড়াকে উসকানি বলে এর পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে। চলতি বছর উত্তর কোরিয়া একের পর এক অস্ত্র পরীক্ষা করছে। এ নিয়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে এ গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটল।