মারুফ আহমেদ (বিশেষ প্রতিনিধি)
কোভিড ১৯ টিকা কার্যক্রম চলছে। পরিকল্পনাহীন অনিয়মও যেন চলছে সমান তালে। ছাত্র, সাধারণ জনতা ও প্রবাসীরা রোজ ভ্যাকসিন নিতে হাসপাতালের তিন তলায় ভিড় জমায়। সবাইকে এসে দাঁড়াতে হয় লাইনে। সিঁড়ি থেকে উঠেই কোভিডের লাইনের ভেতর দিয়ে রোগী, রোগীর আত্নীয় পরিজন ও ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের যাতায়াত করতে হচ্ছে। করোনা থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন নেবার লাইনে যারা অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। দেখা গেল,
করোনার চিকিৎসা নিতে আসা, বা আক্রান্ত কেউ লাইন পেরিয়ে ওপারে যেতেই দিয়ে যাচ্ছে, যেন করোনা ভাইরাস! আর তা যেন বহুল প্রত্যাশিত ভ্যাকসিনের মতই বিনামূল্যে! জনৈক ব্যাংকার ক্ষোভ প্রকাশ করলেনঃ সকাল ৮ টায় এসেছি, আর এখানকার কিছু হেডমআলারা যে যার পরিচিতদের লাইনছাড়াই টোকেন নাম্বার দিয়েই আমাদের আগে টীকা দিতে পাঠিয়ে দিচ্ছে? এমন অনেককেও ঘেমে নেয়ে ঘুরঘুর করতে দেখা গেছে,
বিদেশ যাবে, কোন সিস্টেম করে পয়সা খরচ করেও টীকার ল্যাটা চুকিয়ে বিদেশ যাওয়ার পায়তারা করতে। কে জানে? হয়ত কোন বে আইনী ইশারার অপেক্ষায় হয়ত টীকা কপালে জুটেও যাবে এদের? আর সাত সকালে দুধের শিশুকে বাড়িতে রেখে আসা জাহানারা শুধু সময় গুনছে, কখন তার১৯৫ সিরিয়াল আসবে? এমনও হতাশায় ভোগা কিছু মানুষ পেয়েছি। মতিঝিল অফিসের কাজ ফেলে এসেছে। দুই মাস হয়েছে। টীকার জন্য আবেদন করা। এখনও এস.এম.এস পাচ্ছে না কেন, তা জানতে? কারও প্রথম, কারও ২য় ডোজের একটি এস.এম.এস যেন- সোনার হরিণ! কোভিডের তৃতীয় তলায় আরও একটি বিষয় খুব ব্যথিত করবে আপনাকে। সারা হাসপাতালের এত বেড, এত রুম সব কি ফিলাপ? রোগীতে ঠাসা? কোভিডের টীকা দেয়ার করিডোরেও রোগী এনে এলোপাতাড়ি শুইয়ে রাখা লাগবে ? আহা, কি যে মন্দ ভাগ্য এমন হতভাগা রোগীদের। নিজ চোখে দেখলে, মানুষের বেগতিক দশা উপলব্ধি হবে। বিষয়টা গুরুতর। কেননা, বাইরের দেশের কোভিড পরিদর্শন কোন টীম যদি এসে বারান্দায় অযত্নে অবহেলায় রোগী ফেলে রাখায় সু নজর যার দেয়ার কথা, মাননীয় হেলথ মিনিস্ট্রার হয়ত বিদেশ থেকে টীকা আনা নিয়ে খুব ব্যকুল। তাই, কোন হাসপাতালের কি নমুনা। সেদিকে সু নজর দেবার সময় মনে হয় খুব কম পাচ্ছেন! আর এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তো সেটা আরও কম। না হলে, ২০২১ সালে এসেও এখনও নোটিশ বোর্ডে, ২০১৯ সালের বড় বড় নীতিবাক্য, এখনও আপনাকে পড়ার জন্য – আমন্ত্রণ জানায়?