২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৩১
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৩১

নিকলী হাওর, আর কত লাশ ভেসে উঠলে ঘুম ভাঙবে প্রশাসনের

কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী, মিঠামাইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনা উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত নিকলী হাওর। সদর হতে যার দূরত্ব প্রায় ২৫ কি.মি.। হাওরের বুকে ভেসে থাকা ছোট ছোট গ্রাম দূর থেকে মনে হয় যেন ভাসমন কল্পপুরী! নিকলী জলরাশিতে হিজল আর করচের সবুজ বন, কূলহারা জলের গভীরে হঠাৎ শুশুকের লাফ বড়ই অদ্ভুত সুন্দর দেখায়। যেই মোহে নিকলীর অপার সৌন্দর্যে ছুটে আসে ভ্রমণ পিপাসুরা। কিন্তু হাওরের নান্দনিকতা যে কতটা দানবীয়। সদ্য নিকলীর হাওরে নিখোঁজ হয়ে লাশ হয়ে ভেসে ওঠা যাহেরুর রহমান সাগরের করুণমৃত্যুটি একটি জীবন্ত উদাহরণ! নিকলীর হাওরে ডুবে যাওয়া হতভাগার লাশটি পাওয়া যায়- ছাতির চরে। স্থানীয় ট্যুরিষ্ট গাইড, নৌ- পুলিশ, প্রশাসনকে পরবতী সময়ে নিকলী ভ্রমণে আরও কঠোর ও সচেতনতার পরিচয় দেয়া উচিত বলে পর্যটকরা মনে করেন। নিকলীর হাওরে ডুবে লাশ হয়ে ভেসে ওঠা বিগত দিনে যেন নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২২ জুলাইও সাগরের মত আরও একটি মৃত্যুর সংবাদ পড়েছি আমরা। সাঁতার না জানা রাজীব নামের এক ট্যুরিষ্ট বন্ধুদের সাথে গোসল করতে গিয়ে তীব্র স্রোতে তলিয়ে যায়। মৃতুহার গত বছরও কিন্তু আমরা দেখেছি। ২০২০’ ১১ জুলাই নিকলীর মোহরকোনা বেড়িবাঁধে ঘুরতে এসে ১৬ বছরের টগবগে তরুণ মারা যায় নিকলীর হাওরে। একই বছর ২৯ আগষ্ট রাজীবের মত গোছলে নেমে ডুবে যায় ইফাত নামের এক ট্যুরিষ্ট। দেখা যায়, প্রতি বর্ষায় নৌকা ভ্রমণে, প্রবল ঢেউয়ের বিপরীতে সাঁতার কিংবা গোসল করার সময় বেশিরভাগ পর্যটকের জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় একটি ট্যুরিষ্ট ক্লাব প্রধান মোঃ হানিফ জানালেন- “নিকলী ভ্রমণে প্রথমেই ভ্রমণকারীকে নিজের জীবন সম্পর্কে নিজেকেই ভাবতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে। আর দলবেঁধে টীম নিয়ে এখানে আসলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট, টায়ার, প্রশিক্ষিত সাঁতারু, সেভার গাইডসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়েই যে কোন জল সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাওয়া উচিত।”
বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত; ” জীবনের চেয়ে প্রাকৃতিক শোভা বেশি বড় হতে পারে না। জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেই সবার জীবনের ইচ্ছে পূরণে যাওয়া উচিত।”

শক্তিশালী ঢেউয়ের বুকে আবেগে ডিংগী নাওয়ে উঠে পরা, মোটর চালিত নাওয়ের গুলইতে শুয়ে আকাশ আর জলের ভালোবাসা দেখলাম অথবা সাঁতার না যেনেও সাঁতারু বন্ধুদের পিছু জলে নেমে পড়লাম, এমন ইচ্ছে থেকে পর্যটকদের বাস্তবতায় ফিরে আসতে হবে। আর নিকলীর স্থানীয় প্রশাসনকে দর্শণার্থীর প্রতি রাখতে হবে সজাগ ও সু-দৃষ্টি।
তবেই নিকলী হাওর আভ্যন্তরীণ লক্ষ্য পেরিয়ে পৌছে যাবে আন্তজার্তিক সীমারেখায়। 

মারুফ আহমেদ

বিশেষ প্রতিনিধি


অভিযোগ নিউজ বিডি ২৪ | OVIJOG NEWS BD 24
Facebook
Twitter
LinkedIn