আগামী ৫ মার্চ থেকে ভারতের রায়পুরের ছত্তিশগড়ে মাঠে গড়াবে রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজ। ৬ দলের এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটাররাও। বাংলাদেশ ছাড়াও টুর্নামেন্টটিতে খেলতে দেখা যাবে ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটারদের।
মূলত অস্ট্রেলিয়া এই টুর্নামেন্ট থেকে নিজাদের নাম সরিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশের সুযোগ হয়েছে অংশগ্রহণের। বাংলাদেশ লিজেন্ডস নামে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া দলটির অধিনায়কত্ব করবেন মোহাম্মদ রফিক। সাবেকদের মাঝে রফিক ছাড়াও দলে রয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, জাভেদ ওমর বেলিম, রাজিন সালেহ, নাফিস ইকবাল ও আফতাব আহমেদদের মতো সাবেক ক্রিকেটাররা।
সিরিজটি খেলতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে রফিক-রাজ্জাকরা। ভারতের বিমানে ওঠার আগে স্কোয়াডে থাকা সবাইকে করোনা নেগেটিভ হতে হবে। এরপর সেখানে পৌঁছে ২ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। ২ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মাঝে এই টুর্নামেন্ট খেলতে হবে তাদের।
সবধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ায় খেলার সুযোগ হয় না সাবেকদের। জাতীয় দলের হয়ে একে অপরের বিপক্ষে খেললেও এখন অনেকের সঙ্গে দেখাও হয় না। তবে রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের কল্যাণে আবারও মাঠে নামার সুযোগ হচ্ছে তাঁদের। এমনটাই জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘অবশ্যই এটা ভালো লাগার একটা বিষয়। খেলা নিয়ে যাই হোক না কেন ভালোই লাগে। আগের সব খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলতে পারব। এদের প্রায় সবার সঙ্গে আমার খেলা হয়েছে। আবারও খেলব ভালোই লাগবে।’
সম্প্রতি দেশের সাবেক ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে লিজেন্ডস চ্যাস্পিয়ন্স ট্রফি এলসিটি টেন ডট টেন টুর্নামেন্ট। সেখানে ভালো করা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারই জায়গা পেয়েছেন রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের বাংলাদেশ লিজেন্ডস স্কোয়াডে। টুর্নামেন্টটিতে ব্যাট হাতে দারুণ সময় পার করেছেন জাভেদ ওমর বেলিম। এ ছাড়া ব্যাটে-বলে দারুণ সময় পার করা রফিক টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার জিতেছেন।
রাজ্জাক আরও বলেন, হ্যাঁ, সবাই দেখা গেছে যে তারা তো সবাই অনেকদিন পরে পরে খেলে। সবাই ওইখানে খেলেছে এটা একটা ভালো দিক হবে। কারণ যারা খেলছে তাদের একটা আইডিয়া আছে। অনেকে আছে যে ভুলেও গেছে কষ্ট হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে কিছুটা হলেও কাজে দেবে কারণ মাঠে থাকার অভ্যাসটাই গুরুত্বপূর্ণ। দল নিয়ে বলে তো লাভ নেই কারণ স্কিল যার যা আছে তার বাইরে যাবে না। নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা করে টুর্নামেন্টটিতে সেটি কার্যকর করা একটু কঠিন হবে বলে মনে করেন সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার। তবে সবাই খেলার মাঝে না থাকলেও টুর্নামেন্টে ভালো করতে আশাবাদী রাজ্জাক। জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই মাঠে নামবেন বলে জানালেন তিনি।
২০২০ সালে শুরু হয়েছিল রোড সেফটি ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম আসর। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে টুর্নামেন্টের মাঝ পথেই স্থগিত করা হয়েছিল সাবেক ক্রিকেটারদের এই সিরিজ। তবে মহামারীর মাঝেও মাঠে গড়াচ্ছে এবারের আসর। ৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টটির গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হবে ১৬ মার্চ। গ্রুপ পর্বের খেলা শেষে শীর্ষে থাকা চার দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে সেমিফাইনাল। ১৭ এবং ১৯ মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়া দুই সেমিফাইনালের পর ২১ মার্চ মাঠে গড়াবে ফাইনাল। সারা বিশ্বেই সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিদিন প্রাণ হারান অনেকে। সেই সঙ্গে আহতও হন অনেক মানুষ।
অনেক ক্ষেত্রে তাদের অবহেলাই দূর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সারা বিশ্বের মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে এই সিরিজটি আয়োজন করা হয়। এই টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড এম্বাসেডর হিসেবে রয়েছেন কিংবদন্তী ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।
বাংলাদেশ লিজেন্ডস: মোহাম্মদ রফিক, জাভেদ ওমর বেলিম, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, আব্দুর রাজ্জাক, মেহরাব হোসেন অপি, হান্নান সরকার, রাজিন সালেহ, নাফিস ইকবাল, আফতাব আহমেদ, মুশফিকুর রহমান বাবু, মোহাম্মদ শরিফ, আলমগীর কবির।