মহেশখালীর মিষ্টি পান পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। যেখান থেকেই আসুক পর্যটকরা খেতে চায় মহেশখালীর এক খিলি মিষ্টি পান। এই সুযোগে বেড়েছে মিষ্টি পান বিক্রেতার সংখ্যা। বাহারি রং এ সাঁজিয়ে বিক্রি হচ্ছে মহেশখালীর মিষ্টি পান। দাম বেশী হলেও খেতে আপত্তি নেই পর্যটকদের।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর পান যে এখনও সুনাম ধরে রেখেছে তা এখনো প্রচলিত আছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও কদর বেড়েছে মিষ্টি পানের। এই আকর্ষনীয় মিষ্টি পান খেতে পর্যটকরাও উদগ্রীব। কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ও মহেশখালীর প্রবেশ পথ জেটিতে সাঁজিয়ে বিক্রি হচ্ছে মিষ্টি পান। মহেশখালী জেটিতে মিষ্টি পান প্রতি খিলি ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পর্যটকরাও এই আকর্ষনীয় মিষ্টি পান খেতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।বাজারে ৫ টাকায় পান পাওয়া গেলেও তাদের পানের কি বিশেষত্ব, জানতে চাইলে মাকসুদ ও নিজামউদ্দিন নাইম জানান, তারা পানে বিশেষ কিছু মসলা ব্যবহার করে থাকেন। এগুলো আসে ভারত থেকে। সবচেয়ে কম দামি পানেই তারা প্রায় ২০ ধরনের মসলা ব্যবহার করেন। যেমন নারকেল, কিসমিস, বাদাম, ধনিয়া, মিষ্টি জিরা, তিল ইত্যাদি। অন্যান্য পানে ব্যবহার করা হয় আরও অনেক মসলা। যেমন পেস্তা, গোলাপের পাঁপড়ি, জ্যষ্টি মধু, কাজু বাদাম। আর ১০০ টাকার পানে দেওয়া হয় ৪০ রকম মসলা। যার মধ্যে জাফরান ও কস্তরী থাকে। পানের দাম যত বেশি, মসলা তত বেশি।মহেশখালী জেটিতে এক মিস্টি পান বিক্রেতা জানালেন, তিনি শুধুমাত্র মিষ্টি পানই বিক্রি করেন। স্থানীয়দের জন্য পান বিক্রি করেন না। পর্যটকদের যে পানবিক্রি করা হচ্ছে তা স্থানীয় লোকজন এত দাম দিয়ে খায় না। মহেশখালীতে আসা অধিকাংশ পর্যটকই অন্তত এক খিলি হলেও পান খায়। অনেকেই প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য কয়েক খিলি পান নিয়ে যায়। প্রতিদিন ৬/৭ হাজার টাকার পান বিক্রি হয়। প্রতিদিন পর্যটকদের কাছে মিষ্টি পানের কদর বড়েছে দাবী করে তিনি বলেন, এতে মাদেরও লাভ। পর্যটকরা খেয়ে খুশী হয়। পর্যটক বাড়লে আরো বেশী বিক্রি হবে পান। আমরা দোকানের সামনে লিখে দিয়েছি এই পান শুধুমাত্র পর্যটকদের জন্য।
আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এসব পানে সুপারি ও চুন দেওয়া হয় না। আর এই পান মুখে দিলে সর্বোচ্চ দুই মিনিট থাকবে মুখে। কথা হয় সুগন্ধা পয়েন্টে আরেক পান বিক্রেতা ‘ফিরোজা পান বিতান’ এর মালিক আবুল শামার সাথে। তার বাড়ি মহেশখালী। দীর্ঘদিন তিনি এই পান ব্যবসার সাথে যুক্ত। তার দোকানে প্রতি খিলি পানের দাম ৫ টাকা ও ১০ টাকা।তিনি জানান, নিজের হাতেই মহেশখালী থেকে পান কিনে আনেন। আর সুপারি কেনেন কক্সবাজার থেকেই। পানে তিনি নারকেল, কিসমিস, বাদাম, ধনিয়া, মিষ্টি জিরা, তিলসহ ১০ থেকে ১২ ধরনের মসলা ব্যবহার করেন। অনেক দোকানে পানের সাথে কেন সুপারি ব্যবহার করে নাম, আর দাম কেন এত বেশি- জবাবে তিনি বলেন, কথায় আছে না- পান খাইলে সুপারি লাগে আরও লাগে চুন। পানের সাথে সুপারি আর চুন না হলে পান খাওয়াই বৃথা। তবে দামের কথায় নিরুত্তর থাকেন আবুল শামা। কক্সবাজারে এরকম অনেক দোকান আছে যেখানে মজাদার মহেশখালীর রসালো পান বিক্রি হয়।ঢাকা থেকে আসা পর্যটক জাফর আলমের সাথে কথা হয় মহেশখালীর জেটিতে। তিনি জানান, মুলত পান চাষ দেখতেই মহেশখালীতে এসেছেন তিনি। তাই এক খিলি পান খেলাম ২০ টাকা দিয়ে। খেয়ে খুব মজা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন মহেশখালীর পানের স্বাদই আলাদা। খুব ভাল লেগেছে।