Search
১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ / ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৪৪

পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ পানি-সাদা পাহাড়

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে প্রকৃতি তার অকৃত্রিম সৌন্দর্য আর নান্দনিকতায় পাহাড় ও নদীকে সাজিয়ে পর্যটকদের যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

ভারতের সীমান্ত পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝিরি-ঝরনাময় সোমেশ্বরী নদীর স্বচ্ছ পানি, সবুজ পাহাড় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে ঘিরে রেখেছে নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী সুড়ঙ্গ দুর্গাপুর উপজেলাকে।   

ভ্রমণপিপাসুদের সোমেশ্বরী নদী স্বচ্ছ পানি আর ধু ধু বালুচর যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সোমেশ্বরী নদীটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বাগমারা বাজার হয়ে স্থানীয় রানীখং পাহাড়ের পাশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য কোনো মৌসুমে সোমেশ্বরীতে পানি প্রবাহ থাকে না। এই নদীর পানিতে নেমে পায়ে বালির স্পর্শ যেন অন্যরকম অনুভূতি। নদীতে নৌকার মাঝিকে ২০ টাকা দিয়ে নদীর এপার-ওপার ঘুরে আসতে পারবেন। শহুরে এলাকায় যাদের একেবারেই ইটপাথরের চার দেয়ালে বড় হওয়া, তাদের ভেতরের মানুষটিকে রঙিন করে তুলতে পারে এ নদীর অপরূপ সৌন্দর্য আর সাদা মাটির পাহাড়ের নীল পানি। আর এসব কিছুই দেখতে পারেন দুর্গাপুর উপজেলার পর্যটন এলাকা বিজয়পুরে।

দেশের অন্য পর্যটন এলাকাগুলো থেকে ভ্রমণপিপাসুরা আলাদা মর্যাদা দিয়েছেন এ জনপদকে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের এ পাহাড়ি অঞ্চল পর্যটকদের কাছে হয়ে উঠেছে দারুণ আকর্ষণীয়।

দুর্গাপুরের ক্রমবর্ধমান পর্যটকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নতুন নতুন সাদা মাটির পাহাড় ও নীল পানির ক্ষেত্র। আগের তুলনায় রাস্তাঘাট অনেকটা ভালো হওয়ায় বিপুল সম্ভাবনাময় দুর্গাপুরে বেড়ানোর চাহিদা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।

এ ছাড়া বিরিশিরি এলাকায় রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও আদিবাসী ঐতিহ্য মণ্ডিত জাদুঘর। ঢাকার মহাখালী থেকে বাসযোগে অথবা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে আসা যায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে।

দুর্গাপুর থেকে স্থানীয় পরিবহন, অটোরিকশা, মাহিন্দ্র, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে সড়কযোগে যাওয়া যাবে সাদা মাটির খনি এলাকায়। সেই সঙ্গে অল্প হেঁটেই যেতে পারবেন সোমেশ্বরী নদীতে। এ ছাড়া ভবানীপুর গ্রামের উঁচু পাহাড় থেকে গাছ ও লতাপাতা ধরে ভয়কে জয় করে নিচে নামলেই দেখা মিলবে পাহাড়ি ঝরনার দেখা।

এলাকায় বেড়াতে আসা গাজীপুর এলাকার এক স্কুলশিক্ষক মো. বরকত উল্লাহ বলেন, আগের তুলনায় রাস্তা অনেক ভালো হওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়াতে পারলাম। পাহাড়ি ঝরনায় পৌঁছানোর পথ অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হলেও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। যাদের পাহাড়, নদীর স্বচ্ছ পানি ও ঝরনা ভালো লাগে, তারা নিঃসন্দেহে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আসতে পারেন।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান যুগান্তরকে বলেন, আজ (সোমবার) বিশ্ব পর্যটন দিবস।  এই এলাকায় বেড়াতে আসা সব পর্যটককে দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই।

আগের তুলনায় এলাকার রাস্তাঘাট অনেকটা ভালো থাকায় দুর্গাপুরের কদর বেড়েছে। এই এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব কম থাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।

স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কোনো পর্যটক যেন পর্যটন এলাকায় প্রবেশ করতে না পারেন, সে জন্য বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষ নজরদারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn