পাকিস্তানের কোয়েটার সেরেনা হোটেলে এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরো ১২ জন। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। গাড়ি বোমা হামলায় পার্কিং এলাকাটিই উড়ে গেছে।
বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত নং রং ওই হোটেলে অতিথি ছিলেন। তবে বুধবার রাতের ওই বিস্ফোরণের সময় রাষ্ট্রদূত হোটেলে ছিলেন না।
চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে হতাহতের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমদ স্থানীয় এআরওয়াই নিউজ টিভিকে বলেন, হোটেলে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে।
নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত হোটেলে ছুটে গিয়ে বিস্ফোরণ এলাকা ঘিরে ফেলে। স্থানীয় নিউজ চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত ফুটেজে অনেক গাড়ি জ্বলতে দেখা যায়। পুলিশ বলেছে, তারা তদন্তকাজ শুরু করেছে। পুলিশ একে আত্মঘাতী গাড়ি হামলা হিসেবে অভিহিত করেছে।
সম্প্রতি পাকিস্তানি তালেবান এবং অন্যান্য উগ্রবাদী সংগঠন আফগানিস্তান সীমান্তে উপজাতীয় এলাকায় তাদের হামলা বৃদ্ধি করেছে।
কোয়েটা শহরে পাঁচতারকার বিলাসবহুল সেরিনা হোটেল বেশ সুপরিচিত। সরকারি কর্মকর্তা এবং ওই এলাকা সফররত পদস্থ ব্যক্তিরা সেরিনা হোটেলে অবস্থান করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে তালেবানের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে এটি ছিল একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং একটি গাড়ি ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে ওই হোটেলে হামলা চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোয়েটা সফররত চীনের রাষ্ট্রদূত আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। সেজন্য হামলার সময় তিনি ওই হোটেলে ছিলেন না।
এই হামলার পরও চীনের রাষ্ট্রদূতের মনোবল অটুট রয়েছে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে তার সফর অব্যাহত থাকবে বলে জানায় বেলুচিস্তান প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বেলুচিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের অন্যতম দরিদ্র এলাকা এবং এখানে বেশ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী, বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং চরমপন্থিরা সক্রিয় রয়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বেলুচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করতে চায় এবং ওই অঞ্চলে চীনের তৈরি অবকাঠামোর বিরোধিতা করছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মনে করে, পাকিস্তানের সরকার এবং চীন একত্রিত হয়ে বেলুচিস্তানের গ্যাস এবং খনিজ সম্পদ স্থানীয় জনগণের কাজে না লাগিয়ে সেগুলোর অপব্যবহার করছে।
সূত্র : আল জাজিরা, বিবিসি ও দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল