২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৩৭
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৩৭

প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাল চীন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করার পরপরই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রদূত চীনা নেতাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এ অভিনন্দন জানান তিনি।

ঢাকার চীনা দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেছেন, চীনা নেতারা দীর্ঘ দিনের লালিত সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং গভীর সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীনের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে চীন এবং বাংলাদেশ উভয়ই একটি সংকটময় পর্যায়ে রয়েছে। উন্নয়ন আধুনিকায়নে চীন সবসময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত অংশীদার এবং নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে পাশে ছিল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনায় চীন ও বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধার মডেল স্থাপন করেছে।

বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে চীন বিরোধিতা করে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীন বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে। চীন বাংলাদেশে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে। ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চীন বাংলাদেশকে সহায়তা করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

রাষ্ট্রদূত ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের ২০৪১ রূপকল্প বাস্তবায়নে চীন সহযোগিতা করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীন বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে প্রস্তুত। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ক্ষেত্রে আরও উন্নত সহযোগিতা ও অবদান রাখতে পারে চীন-বাংলাদেশ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১টায় পর্যন্ত ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৯৭টির ফলাফল পাওয়া গেছে।

এতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ২২৩টিতে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে।

সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১৫১টি বা তার বেশি আসনে যে দল জয়ী হন তারাই সরকার গঠন করেন। যেহেতু আওয়ামী লীগ ১৫১টির বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছে। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলটি টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এর আগে, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

এর আগে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৯৯টি আসনে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। এ সময়ে কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন গোলযোগ হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় ভোট কেন্দ্রের বাইরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। কোথাও ভোটকেন্দ্রের পাশে ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের কারণে সাতটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয় এবং জাল ভোটে সহায়তা করার জন্য ১৫ ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারচুপি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।

এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।

ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী ছিল আওয়ামী লীগের। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।

এদিকে বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।

Facebook
Twitter
LinkedIn