মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
পটুয়াখালী বাউফলের ইমরান হোসেনের (২৫) প্রেমের টানে ৭ হাজার ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ইন্দোনেশিয়ার তরুণী নিকা উল ফিয়া (২৩)।দুজনের ভাষা ভিন্ন,আলাদা সংস্কৃতি।এত অমিল থাকা সত্ত্বেও ভালোবাসার টানে বিয়ে করেছেন তারা।আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বাউফলে ইমরানের নিজ বাসায় চলছে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
নিকি উল ফিয়া বাউফলে আসায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।আশপাশের লোকজন ভিনদেশী বউ দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছেন।স্বামী ইমরান স্ত্রীর কথা ভাষান্তর করে সবাইকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।এ সময় ইন্দোনেশিয়ার এই তরুণী বাংলাদেশেই থাকতে চান বলে জানান।
ইমরান হোসেন বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের খাজুর বাড়িয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও বিথী আকতারের বড় ছেলে।ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি।নিকি ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়া প্রদেশের জেম্বার এলাকার বাসিন্দা।তারা বাবা ইউলিয়ানতো ও মায়ের নাম শ্রী আনি।
নিকি উল ফিয়া জানান,বাংলাদেশে এসে তার খুবই ভালো লাগছে।এ দেশের খাবার ও এখানকার সংস্কৃতি তার খুব পছন্দ হয়েছে।তার বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাসের ইচ্ছা আছে।
ইমরান হোসেন বলেন,খুবই ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।আমার নিজস্ব আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে।বাড়িতে গতকাল থেকে অনেক মানুষ আসতেছে।
জানা যায়,২০১৬ সালে ফেসবুকে নিকির সঙ্গে পরিচয় হয় ইমরানের।প্রথমে বন্ধুত্ব হলেও,পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।দুই পরিবারের সম্মতিতে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।নিকির পরিবারের কোনো আপত্তি না থাকায় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এসে ইমরানের বাউফলের বাড়িতে যান নিকি।কিন্তু তার বয়স ২১ বছর না হওয়ায় তখন বিয়ে করতে পারেননি তারা।তাই দেশে ফিরে যান নিকি উল ফিয়া।
এরপর দীর্ঘ ৫ বছর পর গত সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন ওই তরুণী।ইমরান তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়ে যান বাউফলে।বুধবার (১ মার্চ) রাত ৮টা সময় স্থানীয় কাজির উপস্থিতিতে ১০১ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন ইমরান।আজ বিয়ের আনুষ্ঠিকতা চলছে।ইমরানের পরিবার ছোট পরিসরে বিয়ের আয়োজন করলেও বাড়ি উৎসুক জনতায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
ইমরানের বন্ধু মাছুম বিল্লাহ বলেন,গতকাল বিকেলে ইমরানের বাড়িতে আসছি।আজ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছে,চারদিক থেকে মানুষজন আসতেছে নতুন বউকে দেখার জন্য।
খাজুর বাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ বিশ্বাস বলেন, ভিনদেশী বউ দেখতে আসছি।নতুন বউ দেখতে তো সবাই আসে।এই বউ তো আবার ইন্দোনেশিয়া থেকে আসছে।তারা সুখী হোক এই কামনা করি।
দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,গতকাল রাতে তারা ১০১ টাকা দেনমোহরে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।স্বাভাবিক ভাবে দূর-দূরান্তের মানুষ নতুন বউ দেখতে আসবে যেহেতু সে ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছে।আমি তাদের দুজনের জন্য অনেক দোয়া করি|