২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:৩০
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:৩০

বইমেলায় ইন্টারনেট সেবা নিয়ে অনেকের ক্ষোভ

বইমেলার দিনলিপি

৮ই ফাল্গুন ১৪৩০/২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বুধবার, অমর একুশের দিন ছিলো। গতকাল মেলা শুরু হয় সকাল ৮ টায় এবং চলে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। অনেক অনেক নতুন বই এসেছে মেলোয়। ২৩৪টি। আজ বইমেলা শুরু হবে দুপুর ৩ টায়। বিকাল ৪ টায় মূল মঞ্চের অনুষ্ঠান। গতকাল শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। রাত ১২:৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল ৮ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। স্বরচিত কবিতাপাঠে প্রায় ১৩৫জন কবি কবিতা পাঠ করেন। সভাপতিত্ব করেন কবি শামীম আজাদ। অমর একুশ সুন্দরভাবে উদযাপন হলেও পাঠক, লেখক ও প্রকাশকের ক্ষোভ দেখা গেছে বইমেলায় নেটওয়ার্কিং নিয়ে। বইমেলার ইন্টারনেট সেবা খুব স্লো ও অকার্যকরও হয়ে যায় মাঝে মাঝে । গতকাল অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের সুন্দর মুহূর্ত সময়মত শেয়ার করতে পারেনি। প্রকাশকরা কাউকে বই অনুষ্ঠান নিয়ে মেলায় আসতে বলার আগেই জানিয়েছে- মেলায় ইন্টারনেট সমস্যার কথা। এই বিষয়টি বাংলা একাডেমির জন্য সামনের বছর বইমেলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকল। প্রযুক্তির উন্নয়নে এই মেলা ও একুশ শুধু আমাদের একারই অংশ নয়। সারাবিশ্বের অনেক মেহমানও আসেন আমাদের বইমেলায়। অনেকের দেশ বিদেশের স্মরণীয় একটি স্থানে এসেছে এই খবরটি দিতে বেগ পাবে। এটা আমাদের কল্পনাতেও আসে না! গতকাল বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৪। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. সরকার আমিন। অমর একুশে বক্তৃতা প্রদান করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর। একুশে বক্তৃতানুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
ড. সরকার আমিন বলেন, রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন ছিলেন সমাজ-সচেতন, শিক্ষানুরাগী ও জ্ঞানদীপ্ত একজন মানুষ। সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে তিনি নারী-পুরুষের ভেদাভেদকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের ভূমিকাই সমান।
আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, বাঙালি জাতির কাছে রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন এখন আর একটি নাম মাত্র নয়, বাঙালি জাতির পথ চলবার এক নিরন্তর অনুপ্রেরণা, এক জ্বলন্ত অগ্নিশিখা। সমাজের কল্যাণের স্বার্থে মুসলিম নারীর শোচনীয় এবং অধঃপতিত অবস্থা সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন তিনি। প্রতিকূলতার ভেতর দিয়েই সংগ্রাম করে তিনি জীবনের পথে, কর্মের পথে অগ্রসর হয়েছিলেন। একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে তাঁর মানবীয় স্বপ্নকে আজও আমরা নিরন্তর বাস্তবে রূপায়িত করে চলেছি।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, শিশুসাহিত্যিক ওয়াসিফ এ খোদা, কথাসাহিত্যিক মাসউদ আহমাদ এবং শিশুসাহিত্যিক ইমরান পরশ।
বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চের আয়োজন : এই মঞ্চে আজ বিকেল ৫ টায় ‘প্রথম কবিতার বই : অনুভূতির দলিল’ এই প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আশনা হাবিব ভাবনা, স্নিগ্ধা বাউল, সঞ্জয় ঘোষ, রিপন আহসান রিতু, মীর রবি, মাশরুরা লাকী ও মিনহাজুল হক। গোলটেবিল সঞ্চালনা করেন কবি ফারহান ইশরাক ও কথাসাহিত্যিক খালিদ মারুফ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল, আমিনুর রহমান সুলতান, হাসানাত লোকমান, বদরুল হায়দার, ফারহানা রহমান, সঞ্জীব পুরোহিত, নূর-এ-জান্নাত, শিমুল পারভীন এবং আরেফিন রব। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম, রূপা চক্রবর্তী এবং আহ্কামউল্লাহ। এছাড়াও ছিল ফকির সিরাজের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং মানজারুল ইসলাম সুইটের পরিচালনায় ‘সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়, কল্যাণী ঘোষ, শিবু রায়, মহাদেব ঘোষ, মিথুন জব্বার, বাবু জব্বার, আব্দুল হালিম খান, স্বর্ণময়ী মন্ডল এবং জান্নাত-এ-ফেরদৌসী। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন প্রিয়ব্রত চৌধুরী (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), মনির হোসেন (গীটার) এবং মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড)।

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি

তথ্যসেবাঃ সমীর কুমার সরকার,
পরিচালক, জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ, বাংলা একাডেমি।
ছবি: অনলাইন

Facebook
Twitter
LinkedIn