আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে নগরীর গাবতলী, শ্যামলী, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাস কাউন্টার থেকে আগামী ২৬ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে কোথাও তেমন ভিড় দেখা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী আন্তজেলা বাসটার্মিনাল এলাকায় বিভিন্ন কাউন্টারে সড়কপথের বাসের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে অগ্রিম টিকিট কাটতে যাত্রীদের ছিল না দীর্ঘ লাইন। করোনার দুই বছর পর এবার ঘোষণা দিয়ে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও যাত্রীদের খুব একটা সাড়া মিলছে না। তবে যে দু-একজন যাত্রী বাসের অগ্রিম টিকিট কাটতে আসছেন তারা কোনো ঝক্কি ঝামেলা ছাড়াই টিকিট কেটে চলে যেতে পারছেন। এতে টিকিট কাটতে আসা যাত্রীরা বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও আশপাশের কাউন্টারগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কাউন্টারগুলোতে দুই-একজন নিয়মিত যাত্রী বসে আছেন। কাউন্টারের কর্মরতরা নিয়মিত যাত্রী তুলতে হাকডাক দিচ্ছে। এসময় কাউকে ঈদের আগাম টিকিটের খোঁজ করতে দেখা যায়নি।
কাউন্টারগুলো বলছে, এই রুটে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। তাই যাত্রীর চাপ অনেকটা কম থাকে। এজন্য অগ্রিম টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীদের ভিড় নেই।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে কর্মরত জাহিদ হাসান জানান, ‘এই রুটে ঈদের ঘরমুখী যাত্রীদের খুব একটা চাপ থাকে না। ঈদের দুই-চার দিন কিছুটা চাপ থাকে, সেটাও তত বেশি না।’
হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে কর্মরত একজন বলেন, ‘আমাদের এই রুটে চলাচলের জন্য অনলাইন, কাউন্টার দুইভাবেই টিকিট বিক্রি চলছে। অনলাইনে টিকিট বিক্রি হওয়ায় কাউন্টারে চাপ কম থাকে। মানুষ অনলাইনেই বেশি টিকিট কিনছে। যে আগে টিকিট করে রাখে সে ভালো সিট পায়।’
এদিকে সায়েদাবাদ এলাকার অন্যান্য বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কাউন্টারেই যাত্রীদের লাইন নেই। দুই একজন করে যাত্রী মাঝে মাঝে এসে নিয়মিত টিকিট ক্রয় করছেন।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও সোহাগ পরিবহনের মালিক মারুফ তালুকদার সোহেল বলেন, আমরা আজ থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করেছি। তবে এটা আনুষ্ঠানিক কোনও দিন তারিখ নয়। মালিকরা যে যার মতো করে তাদের কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছেন। তবে আমরা সাধারণত অগ্রিম টিকিট বিক্রির জন্য শুক্রবার শনিবারসহ ছুটির দিন বেছে নিয়ে থাকি যাতে মানুষের অন্যান্য কাজের ব্যাঘাত না ঘটে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর টিকিট বিক্রির পরিমাণ খুবই হতাশাজনক। আমার কাউন্টারের ম্যানেজাররা জানিয়েছেন, যা বিক্রি হচ্ছে তা বলার মতো না। টিকিট বিক্রি খুবই কম হচ্ছে। মানুষ কেন মুভমেন্টর করছে না, তা বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবছর ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় শেষদিকে রাজধানী ছাড়বেন অধিকাংশ মানুষ। সেক্ষেত্রে ৩০ এপ্রিল ও ১ মের টিকিটের বেশি চাহিদা থাকবে। তাছাড়াও অনলাইনে ৩০ শতাংশ টিকিট কেনার সুযোগ থাকায় সেদিকেও ঝুঁকছেন অনেকে।
আর পরিবহন সংশ্লিষ্টরা কেউ কেউ বলছেন, এত আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রিটাও ‘লোক দেখানো’। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল কালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মহাখালী থেকে আমরা আগামী ২৩ রমজান থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবো। এখন যারা বলছেন, অগ্রিম টিকিট দিচ্ছে এটা আসলে লোক দেখানো।’
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানিয়েছেন, সব বাস মালিকরা ১৫ এপ্রিল থেকে একযোগে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করবে। ওই দিন সকাল থেকেই সংশ্লিষ্ট বাসের কাউন্টার থেকে টিকিট সরবরাহ করতে পারবেন যাত্রীরা।
এদিকে, ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। টিকিট স্টেশনে কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি হবে। সোমবার (১১ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।