সম্প্রতি দেশে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণ। এটি জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য নতুন উদ্বেগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল ৩৭০ জনের।
অধিদপ্তরের তথ্যে আরও দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণ ৬০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
অতি সংক্রমণযোগ্য ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আসার পর থেকে বিশ্ব এখন করোনার নতুন ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরাও হয়তো সামনের দিনগুলোতে অনেক বেশি মাত্রায় করোনা সংক্রমণ দেখতে পাবো।
ইতোমধ্যেই দেশে বেশ কয়েকজনের ওমিক্রন শনাক্তের সংবাদ পাওয়া গেছে।
গত কয়েক সপ্তাহে প্রতিবেশী ভারতেও করোনা সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর অর্থ, নতুন ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক সংক্রমণ রোধে আমাদের শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
টিকাদান কর্মসূচি ত্বরান্বিত করা আমাদের জন্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এতে অবশ্যই রোগীর হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে।
আমাদের দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এখনও করোনার টিকার প্রথম ডোজ পাননি। এটি অবশ্যই আমাদের চিন্তিত করে। তবে ভালো লাগার বিষয় এই যে সরকার এ বছরের জুনের মধ্যে সবাইকে ২ ডোজ টিকা এবং এই বছরের শেষ নাগাদ একটি বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। আর এর জন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি, যার মাধ্যমে এই বিশাল কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ডিসেম্বরে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৯১ জনের মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশের টিকা নেওয়া ছিল না। অর্থাৎ, টিকা কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।
গবেষণায় জানা গেছে, একটি অতিরিক্ত ডোজ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। অর্থাৎ বুস্টার ডোজ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর।
এ সময়ে এসে সরকারের উচিৎ বুস্টার ডোজ কার্যক্রম গতিশীল করা, যেন শারীরিক ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এর আওতায় নিয়ে আসা যায়।
ওমিক্রন নিয়ে আরেকটি উদ্বেগ হচ্ছে এটি পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি সংক্রমিত করছে। এ জন্য টিকাদান কার্যক্রম চালানোর সময় সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে শহর ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই আরও বেশি নারী যেন টিকার জন্য নিবন্ধন করেন।
এ ছাড়া, নারীরা নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে জটিল মনে করছেন কি না, বা তারা কোনোভাবে টিকা নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন কি না, তাও নিশ্চিত করা দরকার। এমন কিছু চিহ্নিত করা গেলে তার সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।
অন্যভাবে বলতে গেলে, করোনার এই নতুন ধরনের সঙ্গে কিংবা আসন্ন কোনো ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করতে আমাদের আরও বিস্তৃত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক টিকা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।