২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১২:২৯
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১২:২৯

বৃটেনে পাওয়া নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে

যুক্তরাজ্যের লাখ লাখ মানুষের জন্য প্রযোজ্য চতুর্থ স্তরের বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিধিনিষেধ আরোপের জন্য দায়ী করা হচ্ছে করোনাভাইরাসের নতুন একটি বৈশিষ্ট্য বা ভ্যারিয়ান্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়াকে।

এছাড়া ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে ক্রিসমাসে মানুষের মেলামেশায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও আসছে ঠিক একই কারণে।

কিন্তু মাত্র কয়েক মাস আগেও ইংল্যান্ডে যার কোন অস্তিত্ব ছিল না, কয়েক মাস পরে এসে সেই নতুন একটি ভ্যারিয়ান্ট বা বৈশিষ্ট্য-বিশিষ্ট করোনাভাইরাস কিভাবে এতটা ছড়িয়ে পড়লো?

ব্রিটিশ সরকারের সংক্রমণ বিষয়ক উপদেষ্টারাও মোটামুটি নিশ্চিত যে এটা করোনাভাইরাসের অন্য ভ্যারিয়ান্টের তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সব কাজই এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনও অনেক অনিশ্চয়তা এবং অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা রয়েছে।

নতুন এই বৈশিষ্ট্যটি নিয়ে কেন উদ্বেগ ছড়াচ্ছে?

মূলত তিনটি কারণে করোনাভাইরাসের নতুন এই ভ্যারিয়ান্টটি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে:

•এটি ভাইরাসের অন্য সংস্করণগুলোকে প্রতিস্থাপিত করছে

•এটির বিভাজন বা রূপান্তর ভাইরাসের কিছু অংশে পরিবর্তন আনে, যা গুরুত্বপূর্ণ

•এসব বিভাজনের মধ্যে বেশ কিছু ল্যাবে পরীক্ষার পর দেখা গেছে যে এগুলো মানুষের দেহের কোষকে সংক্রমিত করার ভাইরাসের যে সক্ষমতা তা বাড়ায়

এসব বৈশিষ্ট্য ভাইরাসটিকে সহজে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা দেয়।

যাই হোক, বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা এখনও সম্পূর্ণ নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে নতুন স্ট্রেইনটি উপযুক্ত পরিবেশ পেলে দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে – যেমন লন্ডনের মতো জায়গা, যেখানে এর আগে পর্যন্ত দ্বিতীয় স্তরের বিধি-নিষেধ ছিল।

ভাইরাসটির সংক্রমণ কমিয়ে আনতে এরই মধ্যে চতুর্থ পর্যায়ের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের কোভিড-১৯ জেনোমিক্স কনসোর্টিয়ামের অধ্যাপক নিক লোমান বলেন, “ল্যাবরেটরিতে এ নিয়ে পরীক্ষার দরকার আছে, কিন্তু এর জন্য কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে অপেক্ষা করার সময় আছে কি? সম্ভবত এই অবস্থায় নয়।”

এটা কত দ্রুত ছড়ায়?

সেপ্টেম্বরে প্রথম ভাইরাসের এই নতুন ধরণটি শনাক্ত করা হয়। নভেম্বরের দিকে লন্ডনে আক্রান্তদের মধ্যে চার ভাগের এক ভাগ ছিল নতুন বৈশিষ্ট্যের এই ভাইরাসের শিকার। আর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এটি দুই-তৃতীয়াংশে পৌছায়।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যা বলেছেন সেটি হচ্ছে, এই বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসটি ৭০ শতাংশ বেশি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, এটা হয়তো ‘আর নাম্বার’ বাড়িয়ে দিচ্ছে – এটার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, মহামারি কি আসলে ছড়িয়ে পড়ছে না-কি কমছে। এটা হিসাব করা হয় ০ থেকে ৪ এর মধ্যে।সত্তুর শতাংশ বেশি হারে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উঠে আসে শুক্রবার ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ড. এরিক ভলজ-এর একটি উপস্থাপনায়।

তিনি বলেন, “এটা এখনই বলা খুব কঠিন … কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, সেটি হচ্ছে যে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, ভাইরাসটির অন্য যে কোন বৈশিষ্ট্যের তুলনায় এটি ছড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, “এটা এখনই বলা খুব কঠিন … কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে, সেটি হচ্ছে যে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, ভাইরাসটির অন্য যে কোন বৈশিষ্ট্যের তুলনায় এটি ছড়িয়ে পড়ছে।

তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এর উপর নজর রাখতে হবে।”

তবে নতুন এই স্ট্রেইনটি কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে তার কোন নির্দিষ্ট হিসেব নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তাকে জানিয়েছেন যে, এটি ছড়িয়ে পড়ার হার ৭০ শতাংশের কম বা বেশি হতে পারে।

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় যে, এটি আরও বেশি সংক্রামক কি-না?

“এখনও পর্যন্ত যে তথ্য জানা যাচ্ছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয় এবং এগুলো অনুযায়ী কোন দৃঢ় মতে পৌঁছানোও সম্ভব নয় যে ভাইরাসটি আসলেই বিশালভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে,” বলছেন ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জোনাথন বল।

Facebook
Twitter
LinkedIn