রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। হাট ভর্তি গরু-ছাগল। বড়-মাঝারি সাইজের গরু সাজিয়ে বসেছেন বেপারিরা। তবে দামের ব্যাপারে অনেকটাই বেপারোয়া তারা। আর ক্রেতারাও অসহায়। অনেক বেপারি বলছেন, যদি গরু বিক্রি করতে না পারি তাহলে বাড়ি নিয়ে যাবো। তবুও আমরা যা দাম বলেছি সে দামে বিক্রি করার চেষ্টা করবো। এমন মন্তব্য করায় অনেকটাই অসহায় পড়ছেন ক্রেতারা।
তবে এ বছর পশু কেনা ও লালনপালনে অনেক খরচ বাড়ায় কোরবানির পশু দাম একটু বাড়তি চাচ্ছেন বেপারিরা। তারা বলছেন, গরু লালন-পালনে অনেক খরচ। ন্যায্য দামই চাচ্ছেন তারা।
রামপুরার বাসিন্দা হাসিব বলেন, ৮৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনলাম। এবার দাম কিছুটা বেশি। গতবার এই আকারের গরু কিনেছে ৭২ হাজার টাকায়।
গুলশানের বাসিন্দা রিফাত শাহরিয়ার বলেন, এবার দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। আর বেপারিরা তো এক দাম বলেই বসে থাকে তারা।
কলাবাগানের বাসিন্দা শোভন জানিয়েছেন, বেপারিরা দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি। শুধু হাঁকাচ্ছেন তা-ই না, যা দাম বলছেন, সেখান থেকে নামতেই চাচ্ছেন না তারা।
মিরপুরের শিমুল জানিয়েছেন, দুপুর ২টা এসেছেন গাবতলীর হাটে। উদ্দেশ্য ৬০/৭০ হাজার টাকার মধ্যে মাঝারি সাইজের গরু কেনা। কিন্তু বেপারিরা যে দাম চাইছেন তা তার কাছে একটু বেশিই মনে হচ্ছে।
কমলাপুরের জাহিদ জানিয়েছে, ২ দিন বিভিন্ন হাটে ঘুরেছি। দাম ও পছন্দসই গরু পাইনি। আজও চেষ্টা করেছি কিন্তু এখনও গরুর দেখা পেলাম না।
আর বরাবরের মতো ক্রেতাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন গরু বেপারিরা। তারা বলছেন, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তারপর বৈরি পরিবেশে গরু ঢাকায় আনা, পরিবহন খরচ। সবমিলিয়ে ন্যূনতম লাভের দেখা মিললেই গরু বিক্রি করতে চান তারা।
আফতাবনগর হাটে বগুড়া থেকে আসা বেপারি আসিফ বলেন, সোমবার ৬টি মাঝারি আকারের গরু নিয়ে এ হাটে এসেছি। এর মধ্যে একটি বিক্রি হয়েছে। তবে ক্রেতারা দাম কম বলছেন। এবার গতবারের চেয়ে গরুর দাম একটু বাড়তি। তাই কম দামে গরু বিক্রি করা যাচ্ছে না।
নাটোর থেকে আসা বেপারি সেলিম জানিয়েছে, যদি গরু বিক্রি করতে না পারি তাহলে এক হাজার টাকা খরচ করে বাড়ি নিয়ে যাবো তবু দামটা ঠিক মতো না পেলে গরু বিক্রি করবো না।
পাবনার চাটমোহর থেকে ছয়টি গরু নিয়ে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম। চারটি ছোট আকারের গরু বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু বড় দুটি বিক্রি হচ্ছে না।
আরেক বিক্রেতা ফরিদপুরের আলম বেপারি সাতটা গরু নিয়ে এসেছেন। প্রথম দিকে ভালো দাম বললেও বিক্রি না করে এখন ক্ষতি কমানোর হিসাব কষছেন।
রাজবাড়ি থেকে আসা বেপারি শিপন তালুকদার বলেন, ১০ টা গরু নিয়ে গতকাল হাটে এসেছি। কিন্তু এখনো ভালো দাম পাচ্ছি না। আশা করি গরুগুলো বিক্রি করতে পারবো।
তবে ক্রেতা-বিক্রোতারা মনে করছেন, বিকেল নাগাদ হাটে আরও চাপ বাড়বে গরুর হাটগুলোতে।