পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন ইস্কান্দার-এম ক্ষেপণাস্ত্র ৫০০ কিমি (৩১০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে (ফাইল ছবি)
ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই এবার বেলারুশে পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সামনের মাসগুলোতে মস্কোর মিত্র এই দেশটির কাছে স্বল্প-পাল্লার এসব পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন বেলারুশের কাছে যে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাতে যাচ্ছেন, তার নাম ইস্কান্দার-এম ক্ষেপণাস্ত্র।
এটি পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পরিসীমা ৫০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ এগুলো ৫০০ কিমি (৩১০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইস্কান্দার-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি ‘প্রচলিত এবং পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে এবং এর মাধ্যমে উভয় ধরনের ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারে’।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।
মূলত গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। আর সেই সময় থেকেই প্রেসিডেন্ট পুতিন পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেছেন। পুতিনের এসব মন্তব্যকে কেউ কেউ নিজের কাজে পশ্চিমা দেশগুলোর হস্তক্ষেপ না করার জন্য একটি সতর্কতা হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
শনিবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, রেলারুশের এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমানগুলোকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে রাশিয়া। এতে করে বেলারুশিয়ান এসব যুদ্ধবিমান পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারবে।
এদিকে শনিবার ইউক্রেনের লুহানস্কের সেভেরোদোনেতস্ক শহরের দখল নিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এর মাধ্যমে পুরো লুহানস্ক অঞ্চলটি এখন রাশিয়ার দখলে চলে এলো।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি অবশ্য রুশ নিয়ন্ত্রণ থেকে ভূখণ্ড ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, রুশ সেনারা সেভেরোদোনেতস্কসহ ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল দখল করেছে, সেসব অঞ্চল মুক্ত করবে কিয়েভ।
মূলত সেভেরোদোনেতস্ক শহর পতনের পরই রুশদের কাছে হারানো সব অঞ্চল পুনরায় ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানান জেলেনস্কি।