২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:২০
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ৪:২০

ভালো জায়গায় বিনিয়োগ করলে রিটার্ন আসবেই: শাকিল রিজভী

সবার কাছে টাকা থাকে না। টাকা তার কাছেই থাকে যে টাকাকে সম্মান করে। ভালো জায়গায় বিনিয়োগ করলে রিটার্ন আসতেই থাকে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকিও নিতে হবে এবং নিরাপত্তার-ব্যবস্থা রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কমিশনের (ডিএসই) সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো -২০২৩ এর ‘আপনার টাকা কোথায় রাখবেন’ বিষয়ক সেমিনারে প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শাকিল রিজভী বলেন, ভালো জায়গায় বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীর কাছে রিটার্ন আসতেই থাকে। সঞ্চয়পত্রে ৮ বছরে টাকা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে কত কম সময়ের মধ্যে বিনিয়োগের অর্থ দ্বিগুণ করা সম্ভব হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঝুঁকি নিতে এক্সপার্ট হলে পরবর্তীতে আরও বড় ঝুঁকি নেওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, কোনো বিনিয়োগকারী প্রথমদিকে পুঁজিবাজারে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে পারে। বাকি ৪০ লাখ টাকা নিরাপদ জায়গায় বিনিয়োগ করা উচিৎ। তবে নিরাপদ জায়গায় বিনিয়োগ করলে টাকার পরিমাণ কিছু কমতে থাকে। আমি বিনিয়োগ ও ট্রেড একইসঙ্গে করার পরামর্শ দেই। কম দামের শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে লাভ হবে। কাঙ্খিত লাভের পরিমাণ থাকতে হবে ২৫ শতাংশ। ১ কোটি টাকা ৮ বার ডাবল করতে পারলে ১২৮ কোটি টাকা হয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে পারলে লাভের পরিমাণ বেড়ে যায়।

সেমিনারে সেশন চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস এর এমডি মনিরুজ্জামান। এ ছাড়া প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিএসই’র পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও শহীদুল আলম ও এডজ এএমসি’র সিইও আলী ইমাম।

মনিরুজ্জামান বলেন, বিনিয়োগের টাকা কোথায় রাখবো সেটা একটু চিন্তার বিষয়। সরকারের সঞ্চয়পত্র ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এসকল প্রোডাক্টে বিনিয়োগ করায় কোনো সন্দেহ নেই। এখানের বিনিয়োগ সবচেয়ে নিরাপদ। এ সময় তিনি বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে জেনে-শুনে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

এ সময় নাসির উদ্দিন বলেন, আমি সব সময় দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের কথা বলি। কারো বয়স ৩০ বছর হলে তাকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে বলবো না। কারণ তার সামনে অনেক সময় আছে। বর্তমানে ইকুইটি মার্কেটে কম দামের অনেক শেয়ার আছে। এসব শেয়ারের দাম দুই বছরের মধ্যে ডাবল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুজব ও ইমোশনকে এড়িয়ে চলতে হবে। শেয়ার ট্রেড করতে কিছু খরচ আছে। এখানে বিনিয়োগ করার পরে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। পুঁজিবাজারে দুই ধরনের ঝুঁকি থাকে। একটি হলো আর্থিক ঝুঁকি ও অন্যটি শারীরিক ঝুঁকি। পুঁজিবাজারে স্থির থাকতে পারলে বিনিয়োগ ঠিক থাকে। মার্জিন লোন নিয়ে শেয়ার লেনদেন করলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। মার্জিন লোন নিয়ে ব্রোকারেজ হাউস বেশি লাভ করে। তাই মার্জিন নিয়ে ঝুঁকি কমানোর পদ্ধতি জানতে হবে। ইমোশন ও গুজবে কান দিয়ে অনেকে ক্ষতির মুখে পড়ে। বিনিয়োগ করা সম্পদের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ আছে কিনা তা দেখতে হবে।

এদিন শহীদুল আলম বলেন, সরকারি সিকিউরিটিজে কোনো ঝুঁকি নেই। এই খাতে বিনিয়োগ করে টাকা বের করতে গেলে ব্যাংকে জমা হয়। সঞ্চয়পত্রে কোনো লিকুইডিটি নেই। এক বছর পরে লিকুইডিটিসহ কিছু রিটার্ন পাওয়া যায়। ট্রেজারি বিল ও বন্ড যেকোনো সময় বিক্রি করা যায়। বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লিকুইডিটি করা সম্ভব। সরকারি খাতের বিনিয়োগে ট্যাক্সের পরে কি পাবেন সেটা দেখার বিষয়। তবে সঞ্চয়পত্রে কোনো ঝুঁকি নেই। তাই সঞ্চয়পত্রের পরে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করা উচিত। এছাড়া সব টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। যে কোম্পানি আপনার নিজের মনে করবেন সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন। ভালো কোম্পানি আপনাকে লভ্যাংশ দেবে। গুজবে কান দিলে সব টাকা হারাবেন। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে আপনার টাকার জিম্মাদার হিসেবে কাজ করতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠান ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn