মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের জ্যেষ্ঠ দুই কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ভারতীয় পণ্য বর্জন করেছেন কুয়েতের ব্যবসায়ীরা। সোমবার কুয়েতের একটি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাদের তাক থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলেছেন বলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কুয়েতি একটি সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাক থেকে ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলেছেন। এছাড়া ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মাঝে সোমবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিজেপির নেতাদের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইরান।
কুয়েতের আল-আরদিয়া কো-অপারেটিভ সোসাইটি মার্কেটের কর্মীরা বিজেপির নেতাদের মন্তব্যের প্রতিবাদে ভারতীয় চা এবং অন্যান্য পণ্য তাক থেকে নামিয়ে ট্রলিতে স্তূপ করে রেখেছেন।
কুয়েত সিটির কাছের ওই সুপারমার্কেটের চালের বস্তা, মসলা ও মরিচের প্যাকেট প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। প্লাস্টিকের ওপরে আরবি ভাষায় লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘আমরা ভারতীয় পণ্য সরিয়ে ফেলেছি।’
আল-আরদিয়া কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের আল-মুতাইরি এএফপিকে বলেছেন, কুয়েতি মুসলিম জনগণ হিসেবে আমরা মহানবীকে (সা.) অবমাননা মেনে নিতে পারি না। এই চেইন মার্কেটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারতীয় পণ্যের কোম্পানি-ভিত্তিক বর্জনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মুখপাত্র নূপুর শর্মা গত মাসে এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিনদালও নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তাদের মন্তব্যের জেরে দেশটির কয়েকটি রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন।
নূপুর শর্মা ও জিনদালের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও তোপের মুখে পড়েছে ভারত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত এবং মিসরের কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিজেপি কর্মীর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে।
বিজেপির ওই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন এবং দল থেকেও শর্মাকে বরখাস্ত ও জিনদালকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে, বিজেপির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি যেকোনও ধর্মের, যেকোনও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অবমাননার তীব্র নিন্দা জানায়। কোনও সম্প্রদায় বা ধর্মকে অপমান বা হেয় করে, এমন যেকোনও মতাদর্শের বিরুদ্ধেও বিজেপির অবস্থান। বিজেপি এমন মানুষ বা মতাদর্শের প্রচার করে না।’