করোনা মহামারীতেও পাওয়া গেল ‘ত্রাতা’ সালমান খানকে। নিজেদের প্রাণের তোয়াক্কা না করে যারা দিনরাত মানুষের জীবনরক্ষায় লড়ে চলেছেন, পরিবার-পরিজন ছেড়ে ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে রয়েছেন, এবার সেই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এলেন বলিউড সুপারস্টার। দায়িত্ব নিলেন তাদের পেট ভরানোর। মুম্বাইয়ের রাজপথে বেরিয়ে পড়েছে তার খাদ্য সরবরাহকারী গাড়ি।
করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতেও। সংক্রমণের তালিকায় দেশটি বর্তমানে শীর্ষে। নিত্যদিন হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্যবিদদের কপালের ভাঁজ ক্রমাগত প্রশস্ত হচ্ছে। নিজেদের পরিবার ছেড়ে অহরাত্রি তারা মানবসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন। প্রাণের তোয়াক্কা না করেই মানুষের জীবন বাঁচাতে কাজ করে যাচ্ছেন। চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকার জন্য অনেকেই খাবারটুকু জোগাড় করতে পারছেন না। অন্যদিকে, মহামারীর জেরে অনেক দোকানপাটই বন্ধ থাকছে। ফলে এহেন ব্যস্ততার মাঝে খাবার কেনাও প্রায় দায় হয়ে উঠেছে। সেসব স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যই উদ্বিগ্ন ‘ভাইজান’। তাই গত লকডাউনের পর এবার মহামারীর ঊর্ধ্বগতিতেআবারো এগিয়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতরণ করলেন তিনি। দায়িত্ব নিলেন তাদের খাবার সরবরাহ করার।
উল্লেখ্য, যুব সেনার সাথে যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন সালমান। খাদ্যতালিকায় রয়েছে চা, বিশুদ্ধ পানির বোতল, বিস্কুট, এবং উপমা, পোহা, বড়া পাও এবং পাও-ভাজি। এগুলোর মধ্যেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাবার দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। জানিয়েছেন যুব সেনার নেতা রাহুল এন কানাল। পাশাপাশি তিনি এও জানান, ভাইজানের সাথে আলোচনা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুম্বাইয়ের রাস্তায় নেমে পড়েছে খাদ্য সরবরাহকারী গাড়ি। এছাড়াও একটি আপৎকালীন ফোন নম্বর দেয়া হয়েছে। কোনো স্বাস্থ্যকর্মী যদি খাবার না পান, কিংবা কোনো সমস্যায় পড়েন, তাহলে সেই নম্বরে ফোন করলেই তাদের কাছে পৌঁছে যাবে খাবার। আগামী ১৫ মে পর্যন্ত এই খাদ্যসরবরাহ পরিষেবা চালিয়ে যাবেন সালমান খান। এমনটাই জানান যুব সেনার নেতা রাহুল।
অবশ্য এটাই প্রথম নয়। সালমান যে নানারকম সামাজিক কাজকর্মের সাথে যুক্ত কিংবা ভিন্ন সময়ে ভিন্ন প্রেক্ষিতে একাধিকবার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অসহায়দের ত্রাতা হিসেবে ধরা দিয়েছেন, সেকথা সবাই জানেন। গত লকডাউনের সময়েও বলিউডের দুস্থ কলাকুশলীদের বাড়ি বাড়ি তিনি চাল, ডালসহ অত্যাবশকীয় জিনিস পৌঁছে দিয়েছেন। এবারো তার অন্যথা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়েই সেই পরিষেবার উদঘাটন করলেন।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সালমানের ‘বিইং হিউম্যান’ সংস্থাও বহু দুস্থদের পড়াশোনা, ওষুধপত্রের দায়িত্ব নিয়েছে। এবার করোনার দ্বিতীয় কোপের জেরে তিনি আবারো প্রমাণ করে দিলেন যে কেন তিনি বলিউডের ‘ভাইজান’? কারণ একটাই, সবার আপদে-বিপদে যথাসম্ভব পাশে থেকেছেন, থাকার চেষ্টা করেছেন সালমান খান।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস